দাড়ি, বোরকা ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারী উইঘুর মুসলিমদের আটক করে চীন
চীনের উইঘুর মুসলিমদের কেউ দাড়ি রাখলে, বোরকা পরলে এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করলে তাঁকে আটক করা হচ্ছে। তাঁদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হচ্ছে, তা বোঝার জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী নথি হাতে পেয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসি বলছে, পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল জিনজিয়াংয়ে আটক ৩০ হাজারের বেশি উইঘুরের ব্যক্তিগত বিস্তারিত তথ্যের নথিতে তাঁদের প্রতিদিনকার জীবনের ঘনিষ্ঠ চিত্র উঠে এসেছে। ১৩৭ পাতার রেকর্ডে লেখা রয়েছে, আটক উইঘুররা কতবার নামাজ পড়েন, তাঁদের পোশাক কেমন, তাঁদের সঙ্গে কারা যোগাযোগ করতে পারেন এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের আচরণ কেমন।
এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর কয়েক লাখ সদস্যকে বিশাল বন্দিশালায় বন্দি করে রেখেছে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তি চীন। যদিও চীন বলছে, তারা সন্ত্রাসবাদ ও ধর্মীয় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তারা ভুল কিছু করছে না।
বিবিসির উদঘাটন করা সেই নথিকে দৃঢ় করেছে নতুন ফাঁস হওয়া এ তথ্য। এসব নথি প্রমাণ করছে, এই আটককেন্দ্রকে স্কুল বলে যে প্রচার চালাচ্ছে চীন, তা ঠিক নয়। এতে দেখা গেছে, হেলচেম নামের ৩৮ বছর বয়সী এক নারী কয়েক বছর আগে বোরকা পরেছেন বলে তাঁকে বন্দিশালায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
একটি ওয়েব লিংকে ক্লিক করলে অনিচ্ছাকৃতভাবে তাতে একটি বিদেশি ওয়েবসাইট খুলে গেলে নুরমেমাত নামের ২৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
৬৫ বছর বয়সী ইউসুফ নামে এক ব্যক্তিকে নিয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হয়েছে নথিতে। এতে দেখা গেছে, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তাঁর দুই মেয়ে বোরকা পরেছিলেন। তাঁদের সম্পর্কে বলা হয়, তাঁদের মানসিকতায় ইসলামের রাজনৈতিক বোঝাপড়া ও হানবিরোধিতা রয়েছে।
এ ছাড়া সাধারণ ধর্মীয় বিধিনিষেধ মেনে চলার কারণেও লোকজনকে আটক রাখা হয়েছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ঘন দাড়ি রাখায় ও ধর্মীয় আলোচনার আয়োজন করা এক ব্যক্তির বাবাকে পাঁচ বছর আটক রাখার রায় দেওয়া হয়েছে।