দিল্লিতে গোমাংস পরিবহনের সন্দেহে পুলিশের সামনেই ট্রাকচালককে হাতুড়িপেটা
ভারতের রাজধানী দিল্লির কাছাকাছি গুরগাঁও এলাকায় এক ট্রাকচালক যুবককে গরুর গোশত পরিবহনের অভিযোগে হাতুড়িপেটাসহ ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও বিবিসি জানিয়েছে, গত শুক্রবার লুকমান খান নামের এক যুবক ট্রাকে করে মহিষের মাংস নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানান ওই ট্রাকের মালিক।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবককে কয়েকজন মিলে মাটিতে ফেলে মারছে। এর মধ্যেই একজন হাতুড়ি দিয়ে ওই যুবকের মাথা আর হাঁটুতে মারছে, সেটাও ভিডিওতে দেখা গেছে।
ভিডিওতে আরো দেখা যায়, ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা কাউকে বাধা দিচ্ছে না। পরে অবশ্য একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
একটা সময় ভারতে নিয়মিতই গোমাংস পরিবহন করার অভিযোগ তুলে কিংবা বাজার থেকে গরু কিনে নিয়ে যাওয়ার সময় গণপিটুনির ঘটনা ঘটছিল। গত শুক্রবার গুরগাঁওতে আবারও তেমনই একটি ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার লুকমান খান পুলিশকে জানিয়েছেন, একটি ট্রাফিক সিগন্যাল থেকে তাঁকে কয়েকজন যুবক মোটরসাইকেলে তাড়া করে এবং একটা সময় তাঁর ট্রাকটি থামিয়ে কাচ ভেঙে দেয়। তাড়া করা যুবকদের সন্দেহ ছিল, ওই ট্রাকে গোমাংস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং এ অভিযোগে ট্রাকচালক লুকমানকে ব্যাপক মারধর করা হতে থাকে।
লুকমান যাঁর কাছে মাংস নিয়ে যাচ্ছিলেন, ওই বাজার কমিটির সভাপতি তাহির সংবাদমাধ্যমকে বলেন, লুকমানের ট্রাকে মহিষের মাংসই ছিল এবং তিনি ৫০ বছর ধরে এই কারবার করছেন।
গুরগাঁওয়ের বাদশাপুর এলাকায় গণপিটুনির এ ঘটনা ঘটে। সেখানকার সহকারী পুলিশ কমিশনার প্রীত পাল সাঙ্গওয়ান বলেন, ‘অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের আজ রাত বা কাল সকালের মধ্যেই ধরা হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখেই আমরা অভিযুক্তদের চিহ্নিত করছি।’
ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা বাধা দিল না কেন, এ প্রশ্নের জবাবে সাঙ্গওয়ান বলেন, ‘সেখানে ৬০-৭০ জনের একটা মারমুখী মানুষের ভিড় ছিল, অন্যদিকে পুলিশকর্মী ছিল মাত্র তিনজন। তাদের পক্ষে ওই মারমুখী ভিড় সামলানো সম্ভব হয়নি। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই থানার ওসিসহ বড় পুলিশ দল সেখানে যায়। তারাই লুকমানকে উদ্ধার করে আর ওই ট্রাকের মাংস আসলে গরু না মহিষের, তা পরীক্ষা করতে পাঠায়।’
পুলিশ জানিয়েছে, লুকমান খানের মাথার খুলি ফেটে গেছে এবং তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও সংকট পুরোপুরি কাটেনি।