নাইজেরিয়ায় টুইটার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা, অমান্য করলে আইনি ব্যবস্থা

Looks like you've blocked notifications!
নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি। ছবি : সংগৃহীত

নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারির টুইট মুছে দিয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিক্রিয়ায় গত শুক্রবার টুইটারকেই সে দেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে নাইজেরিয়া সরকার। এবার নাইজেরীয় কর্তৃপক্ষ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সরকারের নিষেধাজ্ঞা না মেনে যারা টুইটার ব্যবহার করবে, তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে। নাইজেরিয়ার সরকারের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

নাইজেরিয়ায় টুইটারের কার্যক্রমে স্থগিতাদেশের সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পর দেশটির মোবাইল ফোন প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহারকারীদের টুইটারে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু এরপরও কিছু ব্যবহারকারী  নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন পন্থায় এখনও টুইটার ব্যবহার করছেন।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার নাইজেরিয়ার বিচারমন্ত্রী আবুবকর মালামি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘নাইজেরিয়ায় টুইটারের কার্যক্রমে কেন্দ্রীয় সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ টুইটার ব্যবহার করলে’ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্তকে ‘বিচারের আওতায়’ আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়ার নির্দেশনা তিনি পেয়েছেন।

বুহারির যে টুইট মুছে দিয়েছে টুইটার

গত মঙ্গলবার রাতে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারির একটি টুইট মুছে দেওয়ার পরপরই দেশটির সরকার টুইটার ব্যবহার নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। কী ছিল বুহারির সেই টুইটে?

সূত্রের খবর, বুহারি তাঁর টুইটে ১৯৬৭-৭০ সালের ৩০ মাসব্যাপী গৃহযুদ্ধের সঙ্গে তাঁর বিরোধীদের তুলনা করেন। তিনি লেখেন, ‘এখন যারা সরকারের বিরোধিতা করছে, তারা বয়সে অনেক ছোট। নাইজেরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময়ে কত প্রাণহানি, কত ক্ষতি হয়েছিল—তা তারা জানে না। প্রয়োজনে ওরা যে ভাষাটা বোঝে, সে ভাষাতেই ওদের ব্যবস্থা করা হবে।’

তত্ক্ষণাৎ বুহারির টুইটটি ভাইরাল হয়ে যায়। এর কিছু সময় পর টুইটটি মুছে দেওয়া হয়।

নাইজেরিয়ার তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর গত শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে জানায়, ‘নাইজেরিয়ার সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য মাইক্রোব্লগিং ও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সার্ভিস টুইটারকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

বুহারির প্রতিক্রিয়া

টুইটটি গায়েব হওয়ার হওয়ার পর পালটা প্রতিক্রিয়া দেন মুহাম্মাদু বুহারি। তিনি বলেন, ‘নাইজেরিয়ায় টুইটারের কার্যকলাপ ভীষণ সন্দেহজনক। নামদি কানুর হিংসাত্মক টুইট তো মুছে না টুইটার।’

নামদি কানু নাইজেরিয়া সরকারের বিরোধী দল ইন্ডিজিনাস পিপল অব বিয়ার্ফার নেতা। এই দলের মূল লক্ষ্য হলো নাইজেরিয়ার পূর্ব অঞ্চলকে নিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করা। নাইজেরিয়া থেকে পলাতক নামদি কানু ইসরায়েলে থাকেন।

এদিকে নাইজেরিয়ায় টুইটার নিষিদ্ধের সরকারি ঘোষণাকে ‘গভীর উদ্‌বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেছে টুইটার কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া নাইজেরিয়া সরকার সে দেশে টুইটারের কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেওয়ায় নিন্দা জানিয়েছে বিশ্বশক্তি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তারা বলছে, নাইজেরীয় সরকার এমন পদক্ষেপ সে দেশে বাক্‌স্বাধীনতা খর্ব করবে।

নাইজেরীয় সরকার গতকাল শনিবার জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারির টুইট মুছে দেওয়া ‘হতাশাজনক’, তবে সে দেশে টুইটার সাময়িক বন্ধের পেছনে সেটাই একমাত্র কারণ নয়।

নাইজেরিয়া সরকারের অভিযোগ—‘নাইজেরিয়ার করপোরেট অস্তিত্বকে’ খাটো করে দেখাতে টুইটারকে ব্যবহার করা হচ্ছে।

নাইজেরীয় সরকারের মুখপাত্র বলেন, টুইটারে ‘ধর্মীয়, বর্ণবাদী, বিদেশাতঙ্ক সংক্রান্ত এবং ভুয়া তথ্য ছড়ানো’ হচ্ছিল, যা ‘একাধিক দেশকে ছারখার করে দিতে পারে’।