নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে ফুঁসছে মেঘালয়, মোবাইল-ইন্টারনেট বন্ধ
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে আসামের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয় রাজ্যেও চলছে বিক্ষোভ। এ ছাড়া আজ শুক্রবারসহ টানা তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে। এদিকে, চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই গতকাল বৃহস্পতিবার বিলে সই করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
শিলং থেকে পাওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, অন্তত দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেনাকাটার মূল জায়গা পুলিশ বাজারের দোকানপাটও বন্ধ। আরেকটি ছবিতে দেখা গেছে, শহরের প্রধান সড়কে মশাল নিয়ে মিছিল করা হচ্ছে।
নাগরিক সংশোধনী বিলকে ঘিরে গুজব না ছড়ানোর জন্য টুইটবার্তায় আহ্বান জানিয়েছে মেঘালয় পুলিশ। এ ছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার টুইট করে দেশের মানুষকে সংযত থাকতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একই সঙ্গে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ঘিরে ভয় না পাওয়ার জন্য আসামের বাসিন্দাদের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
এদিকে, উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভের খবর পাওয়া যাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ত্রিপুরা রাজ্যে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া বিক্ষোভ ঠেকাতে রাস্তায় নেমেছে আধাসেনা।
আসাম রাজ্যের পরিস্থিতি ক্রমেই থমথমে হচ্ছে। সেখানে পুলিশের গুলিতে অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া গুয়াহাটিতে এরই মধ্যে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
গতকাল দুপুরে সিদ্ধান্ত হয়, আসামের অন্তত ১০টি জেলায় আরো ৪৮ ঘণ্টা ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। গুজব না ছড়ানোর জন্য গত বুধবার ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন সেবা বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। এ ছাড়া তিনসুকিয়ায় ১২ ঘণ্টার জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৫টা থেকে আজ শুক্রবার ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকে।
গুয়াহাটির গণেশগুড়িতে গতকাল রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশকের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ইট-পাথর ছুড়ে ডিজিপির কনভয়ে হামলা করে আন্দোলনকারীরা।
এ ছাড়া বুধবার রাত থেকেই গুয়াহাটির রাজপথে নেমে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন অন্তত ১০ হাজার মানুষ। হাত কেটে রক্ত দিয়ে পোস্টার লিখে স্লোগান তোলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। দিসপুরের সচিবালয়ের নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে ফেলেন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বঙ্গাইগাঁও ও ডিব্রুগড়ে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। জোরহাটেও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া ডিব্রুগড়ে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। সেখানে যেকোনো ধরনের জমায়েত, মিটিং-মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।