পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হচ্ছেন মমতা

Looks like you've blocked notifications!
আসন্ন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসর সুপ্রিমো (প্রধান) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা জানান, এবার তিনি তাঁর পুরনো বিধানসভা কেন্দ্র দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর থেকে প্রার্থী হচ্ছেন না। তিনি প্রার্থী হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম থেকে।

এই নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনই একটা সময় মমতাকে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতার মসনদে পৌঁছে দিয়েছিল। আর তাই এবারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ময়দানে সেই নন্দীগ্রামকেই বেছে নিলেন মমতা।

আজ শুক্রবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে রাজ্যটির শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই তালিকা ঘোষণা করেন। বিজেপি ও বাম কংগ্রেস জোটের আগেই প্রার্থী ঘোষণা করল তৃণমূল।

প্রতিটি নির্বাচনে দেখা গেছে সবার আগে প্রার্থী ঘোষণা করে তৃণমূল। এবার কিছুটা দেরি হলেও সবার আগে তারাই ঘোষণা করেছে প্রার্থীর তালিকা। প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছে তৃণমূল, এমন অভিযোগ দুদিন আগেই করেছিলেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এই বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল কিছু প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

প্রার্থী তালিকায় দেখা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু পূর্ব মেদিনীপু জেলার নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই লড়ছেন। তিনি বলেন, ‘আমি জীবনে প্রথমবার লোকসভা নির্বাচনে লড়েছি যাদবপুরে। বিধানসভা নির্বাচনে দুবার ভবানীপুর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয় পেয়েছি। এবার ভবানীপুরে দাঁড়াবেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। একটা সময় তিনি বক্সার ছিলেন। এটা আমার ঘরের কাছের বিধানসভা কেন্দ্র। নিশ্চয়ই সেখানে আমার নজর থাকবে।’

এর পাশাপাশি তৃণমূলের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন প্রার্থী হলেন, রাসবিহারীতে দেবাশিস কুমার, বেলগাছিয়ায় অতীন ঘোষ, বাঁকুড়ায় অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরপাড়ায় কাঞ্চন মল্লিক, উলুবেরিয়া পূর্বে প্রাক্তন ফুটবলার বিদেশ বসু, শিবপুরে মনোজ তিওয়ারি, ব্যারাকপুরে রাজ চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রামে বীরবাহা হাঁসদা, রাজারহাট গোপালপুরে অদিতি মুন্সি, মন্তেশ্বরে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, জোড়াসাঁকোয় বিবেক গুপ্তা, বেহালা পূর্বে রত্না চট্টোপাধ্যায়, সিঙ্গুরে বেচারাম মান্না, খড়দায় কাজল সিনহা, ডোমজুড়ে কল্যাণ ঘোষ, শ্রীরামপুরে ডাক্তার সুদীপ্ত রায়, শ্যামপুকুরে শশী পাঁজা, যাদবপুরে দেবব্রত মজুমদার, বেহালা পশ্চিমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিধাননগরে সুজিত বসু, বালিগঞ্জে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, দমদম উত্তরে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, দমদমে ব্রাত্য বসু, কাকদ্বীপে মন্টু রাম পাখিরা, ইংরেজ বাজারে কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী, জঙ্গিপুরের জাকির হোসেন, ক্যানিং পূর্বে শওকত মোল্লা, সোনারপুর দক্ষিণে অভিনেত্রী লাভলী মৈত্র, কালীগঞ্জে অরূপ বিশ্বাস, নৈহাটিতে পার্থ ভৌমিক, বজবজে অশোক দেব, কলকাতা বন্দরে ফিরহাদ হাকিম, চৌরঙ্গীতে নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, বেলেঘাটায় পরেশ পাল, মানিকতলায় সাধন পান্ডে, উলুবেড়িয়া উত্তরে নির্মল মাজি, চন্দননগরে ইন্দ্রনীল সেন, বলাগড়ে মনোরঞ্জন ব্যাপারী, হাবড়া কেন্দ্রে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বারাসত কেন্দ্রে অভিনেতা চিরঞ্জিত প্রমুখ প্রার্থী হচ্ছেন।

এবার প্রায় ২৩ জন বিধায়ক বাদ পড়েছেন প্রার্থী তালিকা থেকে। প্রার্থী করা হয়নি দেবশ্রী রায়কেও। যাদের নাম বাদ গেছে তাঁদের নিয়ে আসা হবে বিধান পরিষদে। এমনটাই জানিয়েছেন মমতা।

এবার নারী প্রার্থী হয়েছেন ৫০ জন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে প্রার্থী হয়েছেন ৪২ জন। তপশিলি জাতি থেকে ৭৯ ও উপজাতি থেকে ১৭ জন প্রার্থী হয়েছেন।

মমতা বলেন, ‘নতুন ও পুরনো মিলিয়ে আমরা প্রার্থী তালিকা করেছি।’

এবার দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় তারুণ্যে জোর দিয়েছেন মমতা। প্রার্থী তালিকায় সমান গুরুত্ব পেয়েছে তপশিলি জাতি এবং উপজাতি সম্প্রদায়। বেশ কয়েকজন প্রার্থীর ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে তাঁদের বিধানসভা কেন্দ্র বদল করা হয়েছে। নারী প্রার্থীর সংখ্যাও আগের চেয়ে বেড়েছে।

একুশের নির্বাচনে তৃণমূল কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছে। তাই প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক ভাবে পদক্ষেপ করতে হয়েছে দলনেত্রীকে। ৮০ বছরের বেশি বয়সীদের প্রার্থী করা হয়নি। বাদ পড়েছেন বেশ কয়েকজন বিধায়ক। তাঁদের কাজে দল খুশি নয় বলেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।