পাকিস্তানে চলন্ত ট্রেনে বিস্ফোরণ : নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৪

Looks like you've blocked notifications!

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে যাত্রীবাহী চলন্ত ট্রেনের ভেতর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো অনেকে।

দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটি পাঞ্জাবের পূর্বাঞ্চলের দিকে যাচ্ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা।

রহিম ইয়ান খান শহরের উপকমিশনার জামিল আহমেদ জানান, পাঞ্জাব রাজ্যের লিয়াকতপুরের কাছাকাছি এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে ট্রেনের ভেতর গ্যাস স্টোভে রান্না করার সময় হঠাৎ সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এ সময় আগুন ধরে গেলে দ্রুত তা আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

আহত যাত্রীরা জানান, অগ্নিকাণ্ডের পর অনেক যাত্রী চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়তে থাকেন। যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে ও বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা গুরুতর আহত হয়েছেন। তবে একপর্যায়ে ট্রেনটি থেমে যায়।

দেশটির রেলমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ জানান, কিছু যাত্রী নিয়ম ভঙ্গ করে দ্রুতগতিতে ছুটতে থাকা ট্রেনটির ভেতর সকালের নাশতা তৈরি করার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে ট্রেনটির চালক সাদি আহমেদ খান জানান, ট্রেনটির ইমার্জেন্সি ব্রেকিং সিস্টেমটি সঠিক কার্যক্ষমতায় ছিল এবং আগুন লাগার তিন মিনিটের মধ্যেই ট্রেনটি থামে। ‘চালক হিসেবে এই দুর্ঘটনা আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ ট্র্যাজেডি,’ বলেন তিনি।

পাঞ্জাবের প্রাদেশিক মন্ত্রী ইয়াসমিন রশিদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিয়াকতপুরের একটি হাসপাতালে আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গুরুতর আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে দুর্ঘটনাস্থলের নিকটস্থ মুলতান শহরে নিয়ে যাওয়া হয়।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সেনাসদস্যরাও উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভী ও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশটির ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার জন্য শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।

নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ইমরান খান টুইটারে জানান, তিনি আহতদের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছেন। এ ঘটনার দ্রুত তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানান, পাকিস্তানের এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিহত ও পাকিস্তান সরকারের প্রতি ‘গভীর সমবেদনা’ প্রকাশ করেছেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি আহত ব্যক্তিদের দ্রুত ও সার্বিক সুস্থতা কামনা করেছেন। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।

রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্বল অবকাঠামো ও সরকারের অবহেলার কারণে পাকিস্তানে প্রায়ই ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। পাকিস্তানের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, যাত্রীরা যে ব্যক্তিগতভাবে ট্রেনের ভেতর গ্যাসের চুলা নিয়ে এসেছিল সেদিকে খেয়াল করেননি রেলওয়ের কর্মকর্তারা, যার ফলে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।