পিএইচডি-মাস্টার্স ডিগ্রির কোনো দাম নেই : তালেবান শিক্ষামন্ত্রী
কাবুল দখলের তিন সপ্তাহ পর গতকাল মঙ্গলবার আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে তালেবান। সরকারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তালেবানের কয়েকজন বর্ষীয়ান নেতা ও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় থাকা হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতাদের।
তাদের মধ্যে দেশটির শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন শেখ মৌলভি নুরুল্লাহ মুনির। মন্ত্রী হওয়ার পর দিনই নুরুল্লাহ মুনিরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে তাঁকে উচ্চশিক্ষার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়।
আজ বুধবার এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে তালেবানের সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল্লাহ মুনিরকে বলতে শোনা যায়, ‘এখনকার দিনে পিএইচডি ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রির কোনো মূল্য নেই। আপনারা দেখুন, ক্ষমতায় থাকা মোল্লা ও তালেবান কারোরই পিএইচডি, এমএ, এমনকি হাইস্কুল ডিগ্রিও নেই। কিন্তু তারা সবার সেরা।’
উচ্চশিক্ষা নিয়ে নুরুল্লাহ মুনিরের এমন মন্তব্যের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এই লোক শিক্ষা নিয়ে কথা বলছেন কেন?’
অপর এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘উচ্চশিক্ষামন্ত্রীই বলছেন যে তার (উচ্চশিক্ষা) কোনো মূল্য নেই।’
ক্ষমতা দখলের পর তালেবান বলেছিল, তারা আগের মতো আফগানিস্তানে কট্টর শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেবে না। কিন্তু তালেবানের এই কথা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সন্দেহ রয়েছে।
তালেবান বলেছিল, তারা আফগানিস্তানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গড়বে। গতকাল তালেবান যে সরকারের ঘোষণা দিয়েছে, সেখানে মন্ত্রিসভায় কোনো নারীকে রাখা হয়নি।
এদিকে আফগানিস্তানের সদ্যঘোষিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ‘শরিয়াহ আইন’ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা।
গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান তালেবানের দখলে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে দেখা যায়নি তাঁকে। তবে গতকাল তিনি একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর এই প্রথম আখুন্দজাদা কোনো বিবৃতি দিলেন।
আখুন্দজাদার বিবৃতিটি ইংরেজিতে প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি দেশবাসীকে এটা নিশ্চিত করতে চাই যে ইসলামিক আইন ও শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নে এ সরকার কঠোর পরিশ্রম করে যাবে।’
বিবৃতিতে আখুন্দজাদা বলেন, ভবিষ্যতে আফগানিস্তানের সব কর্মকাণ্ডই পরিচালিত হবে শরিয়াহ আইন অনুসারে। তালেবানের নতুন সরকার দেশটিতে দীর্ঘ মেয়াদে শান্তি, অগ্রগতি ও উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাবে।