পুলিশ-সাংবাদিকের সামনেই সাবেক এমপি ও তার ভাইকে গুলি করে হত্যা

Looks like you've blocked notifications!
মৃত্যুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন আতিক আহমেদ (ডানে) ও তার ভাই আশরাফ। ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া

অপহরণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য আতিক আহমেদ ও তার ভাই আশরাফ আহমেদকে পুলিশ ও সাংবাদিকদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৫ এপ্রিল) দিনগত রাতে ভারতের উত্তরপ্রদেশে এ ঘটনা ঘটে।

কড়া পুলিশ প্রহরার মধ্যে আসামি আতিক আহমেদ ও তার ভাই যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন তাদের মাথায় কাছ থেকে বন্দুক দিয়ে গুলি চালানো হয়। খবর বিবিসির।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, গুলি চালানোর পরে সাংবাদিক বেশ ধারণ করা তিন ব্যক্তি দ্রুত পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে এবং তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মাত্র কয়েকদিন আগে আতিকের কিশোর ছেলে হত্যা মামলার আসামি আসাদ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। এর আগে আতিক দাবি করেছিলেন, পুলিশের কাছে তার নিজের জীবন হুমকিতে রয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ প্রহরায় কাছাকাছি একটি হাসপাতালে মেডিকেল চেকআপের জন্য নেওয়ার পথে আতিক আহমেদ ও তার ভাই আশরাফ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন। এ সময় তাদেরকে লক্ষ্য করে কাছ থেকে গুলি চালানো হয়। ছেলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিয়েছিলেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আতিক বলেন, ‘তারা (পুলিশ) আমাদের নেয়নি, তাই আমরা যেতে পারিনি।’ এটি ছিল ক্যামেরায় সাংবাদিকদের কাছে তার শেষ কথা।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, সাংবাদিকের পরিচয় দেওয়া তিনজন গুলি চালানোর পরপরই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। ঘটনাস্থলে একজন পুলিশ সদস্য ও একজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মৃত্যুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন আতিক আহমেদ (ডানে) ও তার ভাই আশরাফ। ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া

হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য আতিক আহমেদ ও তার ভাই আশরাফ পুলিশ হেফাজতে ছিলেন। তাদেরকে উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছিল। অপহরণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আতিক আহমেদকে ২০১৯ সালে কারাগারে পাঠানো হয়। গত মাসে পুলিশের কাছে নিজের জীবনের হুমকির বিষয়টি জানিয়ে করা আতিকের আবেদনের শুনানি করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। 

উত্তরপ্রদেশে সরকার ক্ষমতায় রয়েছে হিন্দু-জাতীয়তাবাদী বিজেপি। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটির সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলো।

গত ছয় বছরে উত্তরপ্রদেশে বিভিন্ন মামলায় ১৮০ জনেরও বেশি মানুষ পুলিশের হাতে নিহত হয়েছে। বিরোধী দলগুলো বলছে, রাজ্যটিতে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। পুলিশের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনেছেন মানবাধিকার কর্মীরা, যা রাজ্য সরকার অস্বীকার করে আসছে।