প্রিন্স সালমানের সমালোচক সৌদি রাজকন্যা বাসমাহ ‘নিখোঁজ’

Looks like you've blocked notifications!

সৌদি আরবসহ ওই অঞ্চলে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার জন্য সুপরিচিত সৌদি রাজকন্যা বাসমাহ বিনতে সৌদ গত আট মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। কোনো আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই তাঁকে রিয়াদে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাসমাহর ঘনিষ্ঠ একজনের বরাত দিয়ে জার্মানি বার্তা সংস্থা ডয়চে ভেলে এক্সক্লুসিভ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাসমাহ চাইলেও তাঁর বক্তব্য প্রকাশ করতে পারছেন না, কারণ তাঁর সব যোগাযোগের উপর নজর রাখা হচ্ছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ঐ ব্যক্তি নাম প্রকাশ করেননি।

বাসমাহ দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের সাংবিধানিক সংস্কার ও মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে আসছেন। তাঁর মতো দেশটির রাজতন্ত্রের সমালোচকরা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্রোধের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজপরিবারের অনেককেই এজন্য হত্যা, গুম, কারাবন্দি ও হুমকির শিকার হতে হয়েছে।

বাসমাহর বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়ে কোনো মন্তব্য পায়নি বার্তা সংস্থাটি।

সূত্র জানায়, চলতি বছরের মার্চে কন্যাকে নিয়ে বিদেশ পালিয়ে যেতে পারেন এমন সন্দেহে বাসমাহকে বন্দি করে সৌদি সরকার। আসলে চিকিৎসার জন্য তাঁর সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার কথা ছিল। এর পর থেকে সৌদি সরকার বাসমাহর ব্যাপারে চুপ আছে।

ডয়চে ভেলের কাছে আসা নথি থেকে জানা যায়, সুইস চিকিৎসকদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ ডিসেম্বর বাসমাহ কন্যাসহ জেদ্দা ত্যাগের ছাড়পত্র পান। কিন্তু ভ্রমণের দিনই দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় ও উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে আনা হয় বলে জানান তাঁর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আইনজীবী লিওনার্ড বেনেট।

বেনেটে বলেন, ওই ঘটনার দুই মাস পর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ জানে না তিনি কোথায় আছেন। আমরা প্রকৃতপক্ষে খারাপ কিছুর আশঙ্কা করছি।’

বেনেট বলেন, কয়েক দফা ফোন কল করার পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হলেও তিনি তেমন কিছু বলেননি। বাসমাহর কথা শুনে মনে হয়েছে তিনি বন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

বেনেট জানান, বাসমাহর গন্তব্য সুইজারল্যান্ডের জেনেভা হলেও যাওয়ার কথা ছিল তুরস্ক হয়ে। অঙ্কারার সঙ্গে শত্রুতামূলক সম্পর্ক থাকায় রিয়াদ বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখেছে।

এখন কোথায় আছেন বাসমাহ?

বাসমাহর ঘনিষ্ঠ সূত্রটি জানিয়েছে, ‘পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ সত্য কিনা সৌদি কর্তৃপক্ষ সেই তদন্ত শেষ করেছে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। বাসমাহর বিরুদ্ধে দেওয়া তথ্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও কেন এখনো তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে সেটি তাঁদের জানা নেই।

কে তাঁকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে, তা পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছে এই সূত্র। রাজকন্যার নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাসমাহর এক বন্ধু ও ব্যবসায়িক সহকর্মী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, শাসক পরিবার ঠিকই জানে বাসমাহ কোথায় আছেন। তিনি বলেন, ‘রাজপরিবারের দুটি সূত্র অনুযায়ী এক নম্বর ব্যক্তি (মোহাম্মদ বিন সালমান) বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। কিন্তু আমি তাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি, তিনি জানেন। আমরাও জানতে চাই বাসমাহ কোথায় আছেন, কেন তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়েছে?’

বাসমাহ নিয়মিত টুইটার ব্যবহার করলেও ফেব্রুয়ারির পর থেকে তিনি অফিশিয়াল অ্যাকাউন্টে নীরব রয়েছেন। জুলাই অবধি তাঁর কর্মচারীরা কিছু ধর্মীয় পোস্ট দিয়েছেন।