পড়ে থাকা পেঁয়াজ কিনতে বাংলাদেশকে ভারতের অনুরোধ

Looks like you've blocked notifications!

ভারতের বেশিরভাগ প্রদেশ পেঁয়াজের জন্য তাদের চাহিদা প্রত্যাহার করার পর দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশকে পেঁয়াজ কিনতে অনুরোধ করেছে। এসব পেঁয়াজ বিভিন্ন প্রদেশের চাহিদার ভিত্তিতে আমদানি করেছিল ভারতের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট এ খবর জানিয়েছে।

ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ে গত সোমবার অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার রকিবুল হককে ভারতের কাছ থেকে পেঁয়াজ কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এসব পেঁয়াজ নিজেদের জন্য আমদানি করেছিল ভারত।

বৈঠকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভারতের একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানান, ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারত ১৮ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে। ভারত মোট ৩৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির চুক্তি করেছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমদানি করা পেঁয়াজ থেকে মাত্র তিন হাজার টন নিয়েছে বিভিন্ন প্রদেশের সরকার, আর বাকি পেঁয়াজ পড়ে রয়েছে মুম্বাইয়ের জওহরলাল নেহরু বন্দরে।’

এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতের ভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রী রাম বিলাস পাসওয়ান জানিয়েছিলেন,  মহারাষ্ট্র সরকার ১০ হাজার টন, আসাম তিন হাজার টন, হরিয়ানা তিন হাজার ৪৮০ টন, কর্ণাটক ২৫০ টন ও ওড়িশা সরকার ১০০ টন পেঁয়াজের চাহিদা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে পেঁয়াজের মূল্য কেজিপ্রতি ১০০ রুপি ছাড়িয়ে যাওয়ার পর উপরোক্ত রাজ্যগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল পণ্যটি আমদানি করার। কিন্তু আমদানি করা পেঁয়াজের উচ্চমূল্য এবং স্বাদের ভিন্নতার কথা বলে এসব রাজ্য এখন আর পেঁয়াজ নিতে নারাজ।

এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের আমদানি করা পেঁয়াজ নিতে রাজি না হলে সেগুলো পচে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পেঁয়াজ একটি দ্রুত পচনশীল নিত্যপণ্য।

ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আরো জানান, ভারত এসব পেঁয়াজের বেশির ভাগই টনপ্রতি ৬০০ থেকে ৭০০ ডলারে আমদানি করলেও, এখন মোদি সরকার বাংলাদেশকে এসব পেঁয়াজ টনপ্রতি ৫৫০ থেকে ৫৮০ ডলারে কেনার প্রস্তাব দিয়েছে।

ওই কর্মকর্তা আরো জানান, ভারতের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবারের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এরই মধ্যে চীন থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ নেপাল হয়ে দেশের বাজারে ঢোকার অপেক্ষায় রয়েছে। তাই বিনামূল্যে পরিবহনসহ ভারতের কিছু প্রণোদনা দেওয়া উচিত।

এমন এক সময়ে বিষয়টি সামনে এলো, যখন প্রায় তিন মাস আগে চার দিনের ভারত সফরে গিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের মোদি সরকারের বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার পদক্ষেপের বিষয়ে প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম, আপনারা হঠাৎ করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার আগে আমাদের জানাবেন। আমাকে রাঁধুনিকে বলতে হয়েছে, অন্য কোনো বিকল্প নেই, আমার খাবার পেঁয়াজ ছাড়াই রান্না করতে হবে। আমি ভারতকে অনুরোধ করবো, এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আগে যেন আমাদের জানানো হয়। আমরা তো প্রতিবেশী।’