ফোরদু পরমাণু স্থাপনায় গ্যাস ঢোকানো শুরু করল ইরান
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান আজ বুধবার থেকে দেশটির ফোরদু পরমাণু স্থাপনার সেন্ট্রিফিউজে গ্যাস ঢোকানোর কাজ শুরু করেছে। ইরানের জাতীয় আণবিক শক্তি সংস্থা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি ও প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানির নির্দেশে দুই হাজার কেজি ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড বা ইউএফসিক্স গ্যাসের একটি সিলিন্ডার ফোরদু ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
দেশটির বার্তা সংস্থা পার্স টুডে এক প্রতিবেদনে জানায়, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএর তত্ত্বাবধানেই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে। পাশ্চাত্যের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতায় দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন ধাপে ধাপে স্থগিত রাখার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইরান এ পদক্ষেপ নিল। এর মধ্য দিয়ে দেশটি এই প্রক্রিয়ার চতুর্থ ধাপ শুরু করল।
ফোরদু স্থাপনায় বুধবার থেকেই গ্যাস ঢোকানোর কাজ শুরু হবে বলে গতকালই জানিয়েছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, ‘পরমাণু সমঝোতায় বলা হয়েছে ইরান ফোরদু স্থাপনায় এক হাজার ৪৪টি সেন্ট্রিফিউজ বসাতে পারবে। কিন্তু সেখানে গ্যাস ঢোকাতে পারবে না। কিন্তু আগামীকাল থেকে আমরা সেখানে গ্যাস ঢোকানো শুরু করব।’
ইরানের প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী সব পক্ষের জানা উচিত তেহরান একা এই সমঝোতা মেনে চলতে পারে না। এই সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী সব পক্ষের হাতে আলোচনার জন্য দুই মাস সময় রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে স্টিল, বিমা, জ্বালানি তেল ও ব্যাংকিংসহ ইরানের সব খাত থেকে তাদের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।
রুহানি বলেন, ইরানের নতুন কার্যক্রমও আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএর তত্ত্বাবধানে অব্যাহত থাকবে ও অতীতের ধাপগুলোর মতো চতুর্থ ধাপেও আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ থাকছে।
তিনি বলেন, ইরানি জাতি অত্যন্ত শক্তিশালী ও সংলাপে বিশ্বাসী। ইরান অত্যন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে।
২০১৫ সালে ইরান ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা সই করে। এরপর ২০১৮ সালে আমেরিকা এই সমঝোতা থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের ওপর সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী অন্য সব পক্ষই তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে এর প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতেই ইরান ধাপে ধাপে তার দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন স্থগিত রাখছে।