বর্ধিত সময়ে গড়াল জলবায়ু আলোচনা, দরিদ্র দেশে অর্থসহায়তায় ঐকমত্য মেলেনি

Looks like you've blocked notifications!
বিজ্ঞানীদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঝড়, জলোচ্ছাস, বন্যার মতো আবহাওয়াগত বিপর্যয় বেশি দেখা যাচ্ছে। ছবি : সংগৃহীত

জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষক কপ-২৬ সম্মেলন শেষের নির্ধারিত সময় পার হলেও এ বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে আলোচনা চলমান রয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।

গত ৩১ অক্টোবর শুরু হওয়া এ সম্মেলন গতকাল শুক্রবার (১২ নভেম্বর) শেষ হওয়ার কথা ছিল। কয়লা ও জীবাশ্ম জালানি খাতে ভর্তুকি এবং দরিদ্র দেশগুলোকে আর্থিক সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা না মেলায় আলোচনা শনিবারে গড়িয়েছে। শুক্রবার সকালে এ বিষয়ে একটি খসড়া প্রকাশিত হলে তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

স্থানীয় সময় আজ শনিবার দুপুরে চূড়ান্ত আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন এবারের সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট ব্রিটিশ মন্ত্রী অলোক শর্মা। যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে কপ-২৬ সম্মেলন চলছে।

ক্ষুদ্র দ্বীপ দেশগুলো শুক্রবার জানায়, সমুদ্রের পানির স্তর বৃদ্ধির ফলে দ্রুততার সঙ্গে তাদের ভূমি হারিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখার বিষয়টি তুলনা করলে শিল্পপূর্ববর্তী যুগে ফিরে যাওয়ার সমান।

সমুদ্রের পানির স্তর বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন ট্যুভালু জলবায়ু মন্ত্রী সিভ প্যানিউ শুক্রবার গ্লাসগোয় সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের দেশ সত্যি সত্যি ডুবে যাচ্ছে। এটা আমাদের অনেকের জীবন-মরণের প্রশ্ন। গ্লাসগো সম্মেলনকে অবশ্যই কার্যকর পদক্ষেপের ঘোষণা দিতে হবে। আমরা যেন ব্যর্থ না হই।’

প্যারিস চুক্তির মূল শর্তই হচ্ছে দেড় ডিগ্রির মধ্যে রাখা। পৃথিবীর সিংহভাগ দেশই এতে স্বাক্ষর করেছিল। এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ ৪৫ শতাংশ কমাতে হবে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্যের কোঠায় আনতে হবে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়লে বিশ্বব্যাপী দৃশ্যমান সব প্রবাল দ্বীপের মৃত্যু ঘটবে।

লন্ডন থেকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ‘উন্নয়নশীল দেশগুলো যাতে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার থেকে সরে আসতে পারে, সেজন্য ধনী দেশগুলোকে অবশ্যই নগদ অর্থ ছাড়তে হবে।’

যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে : বিভিন্ন দেশ ও জোটের মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে সমঝোতা-ঐকমত্য হয়েছে।

হঠাৎ এক ঘোষণায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে চলতি দশকে একসঙ্গে কাজ করবে।

ব্রাজিলসহ বিশ্বের শতাধিক দেশের নেতারা ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ২০৩০ সালের মধ্যে মিথেন গ্যাস নিঃসরণ বন্ধে যৌথভাবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে। দ্রুত বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ কমাতে এ গ্রিনহাউস মিথেন গ্যাস নিঃসরণ বন্ধের উদ্যোগ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে।

৪০টির বেশি দেশ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরে আসার চুক্তি করেছে। যদিও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় বড় দেশ এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি।

দেশগুলোর কাছ থেকে তেল ও গ্যাসের ব্যবহার বন্ধের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা বা দিন তারিখের ঘোষণা আদায়ের জন্য একটি নতুন জোট গঠিত হয়েছে। নতুন তেল ও গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধান কার্যক্রম বন্ধেরও প্রতিশ্রুতি আদায়ে চেষ্টা করবে জোটটি।