বাড়ছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ, ৫৬ জনের মৃত্যু

Looks like you've blocked notifications!

চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। এ ছাড়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অন্তত দুই হাজার বলে জানা গেছে।

এদিকে, চীনের নববর্ষ উদযাপনের চিত্র অন্যবারের চেয়ে এবার পুরোপুরি উল্টো। এর কারণ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। আর এ জন্যই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। অনেক শহরেই বাতিল করা হয়েছে বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান।

বাসিন্দারা বলছেন, ‘তিয়েনআনমেন স্কয়ার এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে শুরু করে সব জায়গাই ফাঁকা। লোকজন নেই বললেই চলে। অনেক পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। তবে বিশ্বাস আছে, সরকার এই অবস্থার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে।’

প্রাণঘাতী এই করোনাভাইরাস কীভাবে বা কোথা থেকে এসেছে, এ নিয়ে ভাবনার অবকাশ নেই। এখন শুধু প্রতিরোধের সময়। এর পদক্ষেপ হিসেবে চীন কর্তৃপক্ষ তালা দিয়েছে ১৩টি শহরে। বন্ধ রয়েছে স্বাভাবিক চলাচল। গণপরিবহন বন্ধ হয়েছে আরো দুদিন আগে। কিন্তু এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না প্রাণঘাতী ভাইরাসটি।

এদিকে, চীনের উহান শহরে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় সকালে মৃত্যু হয় তাঁর।

প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য লড়ে যাওয়া এই চিকিৎসকের নাম লিয়াং উডং (৬২)।

চীনা গণমাধ্যম বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে একই দিনে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে জিয়াং জিজুন (৫১) নামের আরো এক চিকিৎসকের। তবে তিনিও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে লিং উডংয়ের মৃত্যুর পরই এ খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আর এরপরই উহান শহরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত কর্মী ও চিকিৎসকদের নিয়ে শঙ্কা আরো বেড়ে যায়। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উহান শহরের হাসপাতালগুলোতে কর্মীদের উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কের বিভিন্ন ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ফলে একদিকে যেমন উহানবাসীর মধ্যে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে, অন্যদিকে এ ভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে পারছে বিশ্ব।

এরই মধ্যে চীনের উহান শহরে আজ রোববার থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আগামী ছয় দিনের মধ্যে প্রস্তুত হবে এক হাজার শয্যার নতুন একটি হাসপাতাল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এ অবস্থায় প্রশাসনকে সতর্ক করতে নববর্ষের ছুটির দিনও জরুরি বৈঠক করেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

তবে এত শঙ্কার মধ্যেও আক্রান্ত রোগীর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার খবরও রয়েছে, যার কৃতিত্ব রোগীরা হাসপাতাল-সংশ্লিষ্ট সবাইকে দিতে চান।

করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে এক ব্যক্তি বলেন, ‘মেডিকেল কর্মীরা দিনরাত আমার সেবা করেছেন। সে জন্যই এত তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে পারছি।’

এশিয়ার কয়েকটি দেশ ছাড়াও এ ভাইরাস ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ায়। সেসব জায়গায় চিকিৎসকদের সতর্ক অবস্থানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে হংকংয়ে সর্বোচ্চ মাত্রার জরুরি অবস্থা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটিও।