‘ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট’ উল্লেখ করলে ‘কনটেন্ট’ মুছতে হবে, সোশ্যাল মিডিয়াগুলোকে ভারতের চিঠি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব কনটেন্টে নভেল করোনাভাইরাসের বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়্যান্টকে ‘ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বা বলা হয়েছে বা লেখা হয়েছে—সেগুলো অবিলম্বে সরিয়ে ফেলার জন্য গতকাল শুক্রবার সব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে চিঠি দিয়েছে ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের নজরে এসেছে যে, একটি ভুয়া মন্তব্য অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে বলা হচ্ছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নভেল করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট ছড়িয়ে পড়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বৈজ্ঞানিকভাবে তেমন কোনো ধরনের করোনাভাইরাসকে চিহ্নিত করেনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। নিজেদের কোনো প্রতিবেদনে ডব্লিউএইচও বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়্যান্টকে ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট হিসেবে তুলে ধরেনি।’
গত বছর অক্টোবরে ভারতে প্রথম বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। তারপর থেকে তা ভারতীয় প্রজাতির করোনা হিসেবেই বিভিন্ন মাধ্যমে উল্লেখ করা হতে থাকে। যে ভ্যারিয়েন্টকে ভারতে দ্বিতীয় দফায় করোনার বাড়বাড়ন্তের জন্য দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডব্লিউএইচও গত ১১ মে জানিয়েছিল যে, ভারতে গত বছর সর্বপ্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়্যান্ট শনাক্ত হয়। করোনার যেসব ভ্যারিয়্যান্টকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে উদ্বেগজনক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়্যান্ট তার অন্তর্ভুক্ত বলে জানায় ডব্লিউএইচও।
এ ছাড়া করোনাভাইরাস নিয়ে ডব্লিউএইচওর টেকনিক্যাল লিড মারিয়া ভ্যান কেরখোভ জানান, ভারতে যে ধরনের (বি.১.৬১৭) করোনা দেখা যাচ্ছে, তা সারা বিশ্বের কাছে উদ্বেগের বিষয়। প্রাথমিক গবেষণা অনুযায়ী, এই ভ্যারিয়্যান্ট আরও বেশি সংক্রামক বলে দাবি করেন মারিয়া।
তবে ডব্লিউএইচও স্পষ্ট জানিয়েছিল, ‘ডব্লিউএইচও কোনো ভাইরাস বা ভ্যারিয়্যান্টকে যে দেশ থেকে শুরু হয়েছে, সে দেশের নাম দিয়ে চিহ্নিত করে না। আমরা বৈজ্ঞানিক নাম দিয়ে চিহ্নিত করি। সমতা বজায় রাখতে সবাইকে সে পন্থা মেনে চলার আহ্বান জানানো হচ্ছে।’ এরই রেশ ধরে গত ১২ মে ভারত জানিয়েছিল, করোনাভাইরাসের কোনো ভারতীয় ধরন বা ‘ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট’ নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও তেমন কোনো নামকরণ করেনি।
জনসমক্ষে প্রকাশ না করা এক চিঠিতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “(ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট) বললে তা হবে সম্পূর্ণ মিথ্যা। কোভিড-১৯-এর এমন কোনো ভ্যারিয়্যান্ট থাকার কথা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণ হয়নি বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়্যান্টকে ডব্লিউএইচওর কোনো প্রতিবেদনে ‘ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি।”