মিয়ানমারে আরও ১০০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে পারে : অ্যামনেস্টি

Looks like you've blocked notifications!
খাও মিন ইউ (কো জিমি নামেও পরিচিত) এবং ফিও জিয়া থাও। ছবি : সংগৃহীত

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির দলের সাবেক সংসদ সদস্য ও মানবাধিকার কর্মীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে দেশটির সামরিক জান্তা। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা জানানো হয়। গত ৩০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে এটি দেশটিতে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অ্যামনেস্টি বলছে, মিয়ানমারে আরও ১০০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতে পারে।

অ্যামনেস্টি এটিকে 'রাষ্ট্রীয় শোষণের নির্মম উস্কানি' বলে বর্ণনা করেছে। তারা সতর্ক করে বলেছে যে, মিয়ানমারে সামরিক আদালতের দণ্ড মাথায় নিয়ে আরও প্রায় ১০০ জন মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন।

এদিকে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমারের দাতা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম জাপান এ ঘটনায় 'গভীরভাবে শোক' প্রকাশ করেছে।

এএফপি জানায়, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রু বলেছেন, তিনি এ খবর শুনে 'মর্মাহত ও বিধ্বস্ত' হয়েছেন। তিনি জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেন।

চারজনের মধ্যে রয়েছেন- জনপ্রিয় আন্দোলনকর্মী খাও মিন ইউ (কো জিমি নামেও পরিচিত) এবং সু চির দলের সাবেক সংসদ সদস্য ফিও জিয়া থাও। তাঁদের আগেই রুদ্ধদ্বার সামরিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, গত শনিবার গোপনে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তাঁদের চার জনকেই রাখা হয়েছিল মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের শহরতলির ইনসেইন কারাগারে। ওই কারাগারের কর্মকর্তারা চার জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।

তাঁরা জানান, প্রত্যেককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। দুজন ছাড়া আরও যে দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, তাঁরা হলেন- ইউ হল্যা মিয়ো এবং ইউ অঙ থুরা ঝাও। পরিবারের সদস্যরা জানান, তাঁদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়ে জানানো হয়নি। তাঁরা গতকাল সকালে কারাগারে যান এবং মরদেহগুলো নেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসে সামরিক বাহিনী। রাজনৈতিক বিশ্নেষকরা মনে করেন, ভিন্ন মতাবলম্বীদের ভয় দেখাতেই এ চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মিয়ানমারে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দেশটির দ্য ইরাওয়াদ্দি অনলাইনের প্রতিবেদনে দিনটিকে 'কালো দিন' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, মিয়ানমারের মানুষ এ ঘটনায় শোকাহত ও ক্ষুব্ধ। প্রতিবেদনে এ চার গণতন্ত্রী কর্মীকে 'মুক্তিযোদ্ধা' বলে বর্ণনা করা হয়েছে।