যুদ্ধবন্দি বিনিময় করেছে ইউক্রেন-রাশিয়া
প্রতিবেশি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর প্রায় ১০ মাস পর চলতে থাকা বিপর্যয়কর যুদ্ধে সম্প্রতি দু’পক্ষ তাদের মধ্যে কয়েক ডজন যুদ্ধবন্দি বিনিময় করেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দপ্তরের প্রধান আন্দ্রি ইয়েরমাক বুধবার জানান, সাম্প্রতিক যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের আওতায় ইউক্রেনে বসবাসকারী একজন মার্কিন নাগরিক এবং আরও ৬৪ জন ইউক্রেনের সৈন্য মুক্তি পেয়েছে।
বিস্তারিতভাবে না বললেও ইয়েরমাক জানান, মার্কিন ওই নাগরিকের নাম সুদি মুরেকেজি যিনি তাঁর ভাষায় ‘আমাদের লোকজনকে সাহায্য করছিলেন।’ তবে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি মুক্তি পাওয়া ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেননি। জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এই খবরকে নিশ্চিতভাবেই স্বাগত জানাই।’
এদিকে, বুধবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ব্যাপক ড্রোন হামলা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দেশটির পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে যুদ্ধের মাত্রা বাড়িয়েছে রাশিয়া। ২৪ ফেব্রুয়ারি আগ্রাসন শুরুর পর যুদ্ধে এ পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ লোক আর ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে অনেক শহর।
নিয়মিত সান্ধ্য ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, যুদ্ধের মাঠ শান্ত হচ্ছে না। তিনি আরও জানান, রাশিয়া পূর্বাঞ্চলের শহরগুলোতে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করছে।
জেলেনস্কি জানান, রাশিয়ার উচিত বড়দিনের আগেই সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করা যার মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় যুদ্ধের ইতি আসতে পারে।
অন্যদিকে মস্কো এই ধরনের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বলেছে ইউক্রেনকে তাদের ভূখণ্ড হারানোর বিষয় স্বীকার করে নিতে হবে যে কোনো ধরনের অগ্রগতি আগে। বুধবার তারা জানায়, দু’পক্ষের যুদ্ধবন্দি বিনিময় তাদের যোগাযোগের পক্ষে স্বীকৃতি দিলেও ‘বড় দিনের যুদ্ধ বিরতি’র কোনো সম্ভাবনা নেই।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কয়েক শত আটক ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং রাশিয়ার রাসায়নিক সার ও শস্য রপ্তানির একটি চালান পাঠানোর জন্য দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনারও অগ্রগতি হয়েছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস জানিয়েছে, সর্বাত্মক যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের চুক্তির স্বাক্ষরের জন্য আলোচনার উদ্যোগ যুদ্ধ বন্ধে একটি বিকল্প হতে পারে তবে তা নির্ভর করছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর।