জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বৈশ্বিক যুদ্ধবিরতির আবেদনে সাড়া দিয়ে গতকাল ৬ জুলাই বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিদের একটি যৌথ বিবৃতি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিউইয়র্কে আন্তোনিও গুতেরেসকে উদ্দেশ করে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, ‘বিশ্বের সব সংঘাতপূর্ণ এলাকায় তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধ থামাতে এ যৌথ বিবৃতি নিশ্চয়ই আপনার হাতকে আরো শক্তিশালী করবে।’

আজ মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বৈশ্বিক যুদ্ধবিরতির আবেদনে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ, ইকুয়েডর, মিসর, জ্যামাইকা, জাপান, মালয়েশিয়া, ওমান, সেনেগাল, স্লোভেনিয়া ও সুইডেনের স্থায়ী প্রতিনিধিরা এ যৌথ বিবৃতিটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মহাসচিবের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।

১০টি দেশের সহ-উদ্যোগে প্রণীত এ যৌথ বিবৃতিটি গত ২২ জুন প্রকাশ করা হয়। এটি জাতিসংঘের ১৭২টি সদস্য দেশ ও পর্যবেক্ষক সদস্যসমূহ সমর্থন করে। মহাসচিবের আবেদনে এ পর্যন্ত এটিই ছিল সদস্য দেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক সমর্থন। কোভিড-১৯-এর সময়ে যুদ্ধ ও বৈরিতার প্রভাবে বিপর্যস্ত মানবতার জন্য এ বিবৃতিটি বৈশ্বিক সংহতি ও মমত্ববোধের এক শক্তিশালী ও স্পষ্ট বার্তা বহন করে এনেছে।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটির আলোচনায় কোভিড-১৯ মোকাবিলার বৈশ্বিক প্রচেষ্টাসমূহ এগিয়ে নিতে, বিশেষ করে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় এটি মোকাবিলার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ মহাসচিবের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আরো বলেন, ‘সংঘাতপূর্ণ অনেক পরিস্থিতিতে শান্তি আনতে আপনার আবেদন সফলকাম হয়েছে, যদিও এখনো অনেকেই এতে এগিয়ে আসেনি এবং কেউ কেউ এর সঠিক প্রয়োগ করছে না।’

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশ যে অবদান রেখে যাচ্ছে, এ সময় তা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

জাতিসংঘ মহাসচিব তার প্রতিক্রিয়ায় যৌথ বিবৃতিটিকে ‘তার আবেদনের সপক্ষে সেরা ও গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এ জন্য সকল সহ-উদ্যোক্তাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি

জাতিসংঘের মহাসচিব তাঁর যুদ্ধবিরতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু সফল ও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব তুলে ধরার পাশাপাশি আরো অনেক কিছু করা বাকি রয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, এটির বাস্তবায়নই মূল বিষয়। তিনি বৈশ্বিক সংহতি অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেন এবং এই সংহতি অন্যান্য ক্ষেত্রেও বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান। বিবৃতিটির সহ-উদ্যোক্তারা মহাসচিবের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

কোভিড-১৯-এর প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিরতির পক্ষে রাজনৈতিক সমর্থন আদায়ে এ আবেদনটি ছিল মহাসচিবের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা। গত ২৩ মার্চ মহাসচিবের এ আবেদন প্রকাশের পরপরই যেসব দেশ এতে সমর্থন জানিয়েছিল বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম।