রাশিয়ায় করোনা পরীক্ষা করাননি ম্যাক্রোঁ, কারণ...

Looks like you've blocked notifications!
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে গত ৭ ফেব্রুয়ারি বৈঠক করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ছবি : রয়টার্স

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে গত সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বৈঠক করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ওই বৈঠকের আগে কোভিড পরীক্ষা করাতে অস্বীকৃতি জানান ফরাসি প্রেসিডেন্ট। রুশ সরকার এ তথ্য জানিয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

কেন এমনটা করলেন ম্যাক্রোঁ? জবাবে ফরাসি সরকারের একটি সূত্র দাবি করেছে, আসলে এ পরীক্ষা প্রোটোকল বহির্ভূত এবং তা প্রেসিডেন্টের সফরসূচির অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তা ছাড়া কোভিড পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হলে ফরাসি প্রেসিডেন্টের ডিএনএ-সংক্রান্ত তথ্য রুশদের হাতে চলে যেত বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। সে কারণেই রুশদের কোভিড পরীক্ষায় রাজি হননি ম্যাক্রোঁ। তবে, দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠক ঠিকই হয়েছে। শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে বৈঠক করেছেন তাঁরা।

সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ এড়াতেই পুতিন ও ম্যাক্রোঁ পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করেননি।

যে টেবিলে বসে পুতিন-ম্যাক্রো আলোচনা করেছেন, সেটির দৈর্ঘ্য ছিল চার মিটার। সে টেবিলের এক প্রান্তে বসেছিলেন পুতিন, অন্য প্রান্তে তাঁর অতিথি। যদিও অনেকে এ দূরত্বের মধ্যে অন্য বার্তা খুঁজে পাচ্ছেন—দীর্ঘ টেবিলের দূরত্ব কি আসলে দুদেশের কূটনৈতিক দূরত্বেরই প্রতিচ্ছবি?

এসব জল্পনা অবশ্য এরই মধ্যে খারিজ করে দিয়েছেন ফরাসি প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। তাঁদের বক্তব্য—ম্যাক্রোঁকে মস্কোর পক্ষ থেকে দুটি বিকল্প দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে বলা হয়েছিল, হয় তাঁকে রাশিয়ার নিয়ম মেনে কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে। আর, তা না হলে পুতিনের কাছ থেকে দূরে বসে বৈঠক করতে হবে। ম্যাক্রোঁ দ্বিতীয় বিকল্পটি বেছে নেন। এ প্রসঙ্গে ফরাসি সরকারের এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘করমর্দন না করা এবং লম্বা টেবিলের দুই প্রান্তে বসার অর্থ কী, সেটা আমরা ভালোভাবেই বুঝি। আমরা কিছুতেই এমন কিছু করতে পারি না, যার মাধ্যমে তাদের (রুশ প্রশাসনের) হাতে ফরাসি প্রেসিডেন্টের ডিএনএ চলে যাবে।’

প্রশ্ন উঠছে—কোভিড পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা নমুনা থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে তা কীভাবে ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে রাশিয়া? এ প্রশ্নের কোনো উত্তর মেলেনি। এ প্রসঙ্গে ফ্রান্স ঠিক কী আশঙ্কা করছে, সেটাও খোলসা করা হয়নি। তবে, ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার চলমান উত্তেজনার আবহে আয়োজিত বৈঠকে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যেকার এ ‘দূরত্ব’ নজর এড়ায়নি আন্তর্জাতিক মহলের।

অন্যদিকে, মস্কোর দাবি—তারা ফরাসি প্রেসিডেন্টের সমস্যা উপলব্ধি করতে পারছে। তাই, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বৈঠক হয়েছে। এবং তাতে আলোচনা কোনোভাবে প্রভাবিত হয়নি বলে দাবি রুশ প্রশাসনের।

কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আজ শনিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পুতিন-ম্যাক্রোঁর দ্বিতীয় দফা বৈঠক হতে যাচ্ছে এটি।