রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত, নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধারে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান
আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে চলা মিয়ানমার সরকারের বাংলাদেশে বসবাস করা রোহিঙ্গাসহ সব ভোট দেওয়া উপযুক্ত রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা উচিত বলে শুক্রবার দাবি করেছে ফরটিফাই রাইটস।
সংস্থাটির চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ম্যাথু স্মিথ বলেছেন, ‘বিগত নির্বাচনে রোহিঙ্গারা ভোট দিয়েছে এবং নভেম্বর মাসের নির্বাচনে তাদের ভোট দেওয়ার অধিকার থাকা উচিত।’ ‘তাদের ভোটদান সম্ভব। আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সরকারের পর্যাপ্ত সময় রয়েছে’, যোগ করেন ম্যাথু স্মিথ।
গত ২ জুলাই মিয়ানমার ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশন আগামী ৮ নভেম্বর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা করেছে।
দেশটিতে ভোট দেওয়ার জন্য নাগরিকত্ব থাকতে হবে এবং মিয়ানমার সরকার দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্বের অধিকারের অস্বীকার করে আসছে। সম্প্রতি জাতীয় যাচাইকরণ কার্ড (এনভিসি) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি করা হয়েছে। তবে, মিয়ানমারের নাগরিকত্ব না থকলেও ২০১০ সালের নির্বাচনসহ বিগত দিনগুলোতে রোহিঙ্গাদের ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে ওঠেনি।
নব্বইয়ের দশকের গৃহস্থালির তালিকা, এনভিসি, জাতীয় রেজিস্ট্রেশন কার্ড, হোয়াইট কার্ড, হোয়াইট কার্ডের প্রাপ্তি এবং পূর্ববর্তী অন্যান্য সরকার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জারি করা পরিচয় দলিলসহ বর্তমানে দেশটির সরকারের কাছে রোহিঙ্গাদের নথিভুক্তির একাধিক ফর্মের প্রবেশাধিকার রয়েছে।
‘আন্তর্জাতিক মানবতাবাদী সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে মিয়ানমার সরকার এবং বাংলাদেশে মিয়ানমার দূতাবাস নভেম্বরের নির্বাচনে রোহিঙ্গাদের ভোট দেওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণে এবং পুনরুদ্ধারের প্রমাণ হিসেবে এসব দলিলের পাশাপাশি প্রশংসাপত্রের মতো বিকল্প প্রমাণাদি ব্যবহার করতে পারে’, বলছে ফরটিফাই রাইটস।
গত ২ জুলাই, দেশটির ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছিল যে বিদেশে বাস করা মিয়ানমারের নাগরিকরা এ বছরের সাধারণ নির্বাচনে অগ্রিম ভোট দিতে পারবে।
দেশটির সরকার ২০১০ ও ২০১৫ সালের নির্বাচনেও তাদের ভোটদানের ব্যবস্থা করেছিল।
রোহিঙ্গা-শরণার্থী নেতৃত্বাধীন নাগরিক সমাজ সংস্থা আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস গত ৩ মে মিয়ানমারের ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশনকে শরণার্থী শিবিরগুলোতে ভোটার নিবন্ধন এবং ভোটদান প্রক্রিয়া চালু করার জন্য একটি খোলা চিঠি লিখেছে।
২০১৬ এবং ২০১৭ সালে মিয়ানমার আর্মির নেতৃত্বে রোহিঙ্গাদের ওপর গণধর্ষণ, গণহত্যা চলে। এতে বাধ্য হয়ে আট লাখেরও বেশি নারী, পুরুষ ও শিশু পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এখনও ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা যারা মিয়ানমারে অবস্থান করছের তারা গণহত্যাসহ আন্তর্জাতিক অপরাধের শিকার হচ্ছে।
১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। কিন্তু এখনও কোনো রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়নি।