রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইইউ’র কার্যকর সহায়তার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইইউ’র পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি এবং ইউরোপীয় কমিশন-এর (এইচআরভিপি) ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেপ বোরেরে সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। বৈঠকে ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের জন্য প্রচুর সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ক্ষতি হচ্ছে।
বোরেল রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক আচরণের জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান এবং আশ্বাস দেন যে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে ইইউ বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এইচআরভিপিকে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলারের জলবায়ু তহবিলের বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং ইইউকে প্রতিশ্রুতি পূরণের অনুরোধ জানান।
ড. মোমেন অভিযোজন ব্যবস্থার জন্য জলবায়ু অর্থায়নের ৫০ শতাংশ বরাদ্দের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি নদী ভাঙন, লবণাক্ততার অনুপ্রবেশ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, বন্যা এবং খরার কারণে লোকসান ও ক্ষয়ক্ষতির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়া এবং প্রচলিত চাকরি হারানো জলবায়ু অভিবাসী মানুষের দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
ড. মোমেন উপকূলীয় অঞ্চলে এবং নদী ভাঙনপ্রবণ এলাকায় উঁচু ও প্রশস্ত বেড়িবাঁধ তৈরির প্রয়োজনীয়তাও ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি রাস্তাঘাট, সৌর প্যানেল ও বায়ুকলসহ বাঁধ তৈরিতে ইইউ থেকে পাবলিক ফান্ডিং এবং বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
বোরেল বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এইচআরভিপির সঙ্গে একমত পোষণ করে প্রশমন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে প্রযুক্তি হস্তান্তর কামনা করেন।
ড. মোমেন বাংলাদেশ ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্য ইস্যু উত্থাপন করেন এবং ইবিএ স্কিমের আওতায় বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার প্রদানের জন্য ইইউকে ধন্যবাদ জানান। তিনি ২০২৯ সাল পর্যন্ত ইইউতে বাংলাদেশের অব্যাহত বাজার সুবিধা দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ২০২৯ সালে শেষ হতে যাওয়া ইবিএ স্কিম একবার জিএসপি+ সুবিধা প্রদানের অনুরোধ করেন।
এইচআরভিপি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন যে তিনি ইইউর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ইতিবাচক সুপারিশসহ অনুরোধটি পৌঁছে দেবেন।