লকডাউনবিরোধী সশস্ত্র সেনার ভয়ে গৃহবন্দি বেলজিয়ামের শীর্ষস্থানীয় কোভিড বিজ্ঞানী
বেলজিয়ামের শীর্ষস্থানীয় সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মার্ক ভন র্যানস্ট প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ১২ বছরের শিশুসহ তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় স্বেচ্ছাগৃহবন্দি রয়েছেন। করোনাকালীন লকডাউন এবং বিধিনিষেধের কট্টর বিরোধী এক সেনা কর্মকর্তার আক্রমণের ভয়ে তিনি এ ব্যবস্থা নিয়েছেন। বিবিসির খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।
চলমান মহামারিতে বিশ্বব্যাপী অনেক কোভিড বিজ্ঞানী আক্রমণের শিকার হয়েছেন। কিন্তু, অধ্যাপক মার্ক ভন র্যানস্টের ঘটনা একেবারেই আলাদা। কট্টর লকডাউনবিরোধী ও প্রতিশোধপরায়ণ সামরিক বাহিনীর শুটিং ইনস্ট্রাক্টর জর্জেন কোনিংস গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছে একটি মেশিনগান ও রকেট লাঞ্চার। বেলজিয়ামের পুলিশ তাঁকে খুঁজে পাচ্ছে না।
ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেনা ব্যারাক থেকে পালিয়ে আসা জর্জেন কোনিংস গত ১৮ মে কোভিড বিজ্ঞানী অধ্যাপক মার্ক ভন র্যানস্টের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঠিক যে সময় ভন র্যানস্ট বাড়ি ফেরেন, তখনই সেখানে দাঁড়ান জর্জেন। কিন্তু সেদিন অধ্যাপক র্যানস্ট আগে বাড়ি ফিরেছিলেন এবং ঘটনার সময় পরিবারের সঙ্গে বাড়ির ভেতরে ছিলেন।
কট্টর ডানপন্থি সেনা কর্মকর্তা জর্জেন কোনিংস বেলজিয়ামের লকডাউনবিরোধী মনোভাবের লোকজনের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। রাস্তায় যানবাহনে তাঁকে ‘হিরো’ বলে সম্বোধন করে প্ল্যাকার্ডও প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। জর্জেনের সমর্থনে সাবেক সেনাদের একটি ফেসবুক গ্রুপও খোলা হয়। ওই গ্রুপটি বন্ধ করে দেওয়ার আগে এতে ৫০ হাজার সদস্য হয়ে যায়। পরে তারা ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে একটি গ্রুপ খুলেছে বলেও জানা গেছে।
নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মার্ক ভন র্যানস্ট বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে যদি আপনি প্রতিদিন কয়েকবার করে নিয়মিত টেলিভিশনে আসতে থাকেন, মানুষজন এমনিতেই আপনারে দেখে বিরক্ত হবে এবং অসুস্থও হয়ে যেতে পারে। এটা এড়ানোর সুযোগ নেই। তবে দেশে এক ধরনের লোক আছে যারা কিনা বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানীদের ঘৃণা করেন। তাঁদের বেশিরভাগই ভীত-সন্ত্রস্ত ও অনিশ্চয়তায় ভুগে থাকে।’
ইউরোপের দেশটি এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৪ হাজার ৯৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বখ্যাত পরিসংখ্যান সাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার এসব তথ্য জানিয়েছে।