‘লাদাখে চীনা আগ্রাসন ভারত-যুক্তরাষ্ট্রকে কাছাকাছি এনেছে’
লাদাখে চীনের আগ্রাসন নয়াদিল্লিকে যুক্তরাষ্ট্রের আরও কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছে বলে মনে করেন ভূ-কৌশলবিদ ও লেখক ব্রহ্মা চেল্যানি। অর্থনীতিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম এশিয়া নিক্কেইকে দেওয়া এক মতামত নিবন্ধে এ কথা বলেন তিনি। বার্তা সংস্থা এএনআই’র বরাত দিয়ে ইয়াহু নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
গত বছর ভারতে করোনা মহামারিতে লকডাউনের সময় লাদাখের গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে অনুপ্রবেশের সুযোগ নিয়েছিল চীন। গত বছরের শীতের মৌসুম চলে যাওয়ার পর ভারত দেখতে পায় চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) সীমান্তের শত শত কিলোমিটার অঞ্চল দখল করে সেনাঘাঁটি নির্মাণ করে রেখেছে। আর এর সূত্র ধরেই ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্তবর্তী সংঘাত শুরু হয়।
ব্রহ্মা চেল্যানি বলেন, পিএলএ বাহিনী এখনও এখানে ভালোভাবেই অবস্থান নিয়ে আছে। এই অঞ্চলে তাদের দখল ছেড়ে দেওয়া কিংবা বিবাদমান অঞ্চলে পুনরায় সংঘাত ফিরিয়ে না আনতে বাফার জোন মেনে নেওয়ার কোনো মনোভাব চীনের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না। ভারত ও চীনের মধ্যে এটিই সবচেয়ে লম্বা সময় ধরে চলমান সামরিক সংঘাত।
সামরিক বিশেষজ্ঞেরা আশঙ্কা করছেন, ভারত যখন কোভিড মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত, চীন এ সুযোগটি কাজে লাগাতে পারে। এ বিষয়ক প্রস্তুতি পর্যালোচনা করতে সম্প্রতি লাদাখ সফর করেছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবই দেখিয়েছেন।
ব্রহ্মা চেল্যানি বলেন, চীন যখন সীমান্ত অঞ্চল দখল করছিল তখনও এ বিষয়ে শান্ত ছিলেন মোদি, তিনি জনসমক্ষে চীনকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করেন নি। অনেক মূল্য চুকানো নিরাপত্তা ভঙ্গের যে কারণে ভারত ঝুঁকিতে পড়ল, সে বিষয়ে ভারতের কোনো সেনা কর্মকর্তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়নি। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রীও এ ঘটনার কোনো দায় নেননি এবং পদত্যাগ করেননি বলে জানান ব্রহ্মা চেল্যানি।
ব্রহ্মা চেল্যানি বলেন, ভারত চীনের কোনো চাপের কাছে মাথা নত করেনি। অবশ্য করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় চীনের সরকারি সহায়তাও প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।
চীন হয়তো লাদাখ অঞ্চলে নিজেদের দখল বাড়িয়েছে, তবে ভারতের সঙ্গে তাদের এ দ্বন্দ্ব দেশটিকে ওয়াশিংটনের আরও কাছাকাছি এনে দিয়েছে বলে মনে করছেন ব্রহ্মা চেল্যানি। পাশাপাশি এটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর সমৃদ্ধিতেও সহায়তা করেছে। অন্যদিকে নিজেদের সবচেয়ে কাছের ও বড় প্রতিবেশীকেই স্থায়ী শত্রু বানিয়ে ফেলেছে চীন।