লাদেনকে ‘শহীদ’ উপাধি দিয়ে তোপের মুখে ইমরান খান
আল কায়দার সাবেক প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে ‘শহীদ’ আখ্যা দিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
লাদেনকে নিয়ে উত্তাল পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি। শক্ত হাতে সন্ত্রাস দমন না করে, এভাবে একজন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীকে শহীদ বলে উল্লেখ করায় ইমরানের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধী শিবিরের রাজনীতিকরা।
শুধু রাজনৈতিক নেতারা নয়, সাধারণ মানুষও ইমরানের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন।
বৃহস্পতিবার দেশের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে ইমরান বলেন, ‘মার্কিন সেনাবাহিনী যখন অ্যাবোটাবাদে ঢুকে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে, তাঁকে শহীদ করে, তখন বিশ্বের সর্বত্র পাকিস্তানিরা খুবই বিব্রত বোধ করেছিলেন।’
ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়েই সে সময় ইমরানের তীব্র সমালোচনা করেন বিরোধী দলনেতা তথা দেশের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ।
তিনি বলেন, ‘ওসামা বিন লাদেন এক জন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ছিলেন। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী ছিলেন তিনি। আমাদের দেশটাকে পুরো ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। আজ তাকেই কিনা শহীদ বলছেন প্রধানমন্ত্রী।’
পাকিস্তান পিপলস পার্টির সিনেটর শেরি রহমান ইমরানের উদ্দেশে বলেন বলেন, ‘ওসামার জন্যই আজো সন্ত্রাসের শিকার পাকিস্তান। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে তাকেই কিনা শহীদ বলে বসলেন আপনি? ওসামা বিন লাদেন প্রধানমন্ত্রীর আদর্শ হতে পারেন, কিন্তু দেশের মানুষের নন। তিনি গোটা রাষ্ট্রের শত্রু ছিলেন এবং থাকবেন।’
২০১১ সালের ২ মে আমেরিকান সেনার হাতে লাদেনের হত্যার আগে পর্যন্ত ওয়ার্ল্ড ট্রেন্ড সেন্টার ধ্বংসের মাস্টারমাইন্ড লাদেন পাকিস্তানে আছেন, একথা স্বীকার করেনি দেশটি। কিন্তু লাদেনকে সেদেশে পাওয়ার পরে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয় পাকিস্তানের।
১০ বছর ধরে খোঁজ করার পরে লাদেনের খোঁজ পেয়েছিল মার্কিন সেনা। আবোটাবাদে পাকিস্তানের এক মিলিটারি অ্যাকাডেমির কাছেই প্রাসাদোপম বাড়িতে থাকতেন লাদেন। সেখানে তাঁর পরিবারের অন্যান্যরাও ছিলেন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে মার্কিন সেনা আচমকা হানা দেয় সেখানে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই হত্যা করা হয় লাদেনকে। তারপর লাদেনের কফিন বন্দি মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয় সমুদ্রের গভীরে।