শ্রীলঙ্কায় জ্বালানির ঘাটতির কারণে বন্ধ স্কুল ও অফিস
শ্রীলঙ্কায় জ্বালানি ঘাটতি পোষাতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল। একই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের অফিসে না গিয়ে বাসায় বসে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষ এ নির্দেশ দিয়েছে। যদিও এর মধ্যে পড়ছে না অপরিহার্য পরিষেবাগুলো। এএফপির বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেট্রোল, ওষুধ, বৈদেশিক মজুদ, রান্নার গ্যাস এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ঘাটতি শ্রীলঙ্কাকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। স্বাধীনতার পর দ্বীপরাষ্ট্রটি সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুত হ্রাস ও খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি সেদেশের জনগণের দুর্দশাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ একই সময়ে সারা দেশে জ্বালানি স্টেশনগুলোতে সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করছে। এমন জ্বালানির সংকটময় পরিস্থিতিতে সেদেশের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ‘বর্তমান জ্বালানি ঘাটতি এবং পরিবহণ সুবিধার সমস্যাগুলোর প্রেক্ষিতে’ শুক্রবার থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের কাজ করতে অফিসে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহ গতকাল বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘এই মে-আগস্ট মৌসুমে সার পাওয়ার সময় নাও থাকতে পারে, তবে সেপ্টেম্বর-মার্চ মৌসুমের জন্য পর্যাপ্ত মজুদ নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি সবাইকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন।
১২ মে শপথের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী হন রনিল বিক্রমাসিংহে। সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে তাঁর শপথ বাক্য পাঠ করান। রাষ্ট্রপতির সরকারি ভবনে শপথ অনুষ্ঠিত হয়। লঙ্কান সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর এক প্রতিবেদন সেদিন এ তথ্য জানায়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। বিক্ষোভের মুখে তিনি ক্ষমতা হারান। রাজাপাকসে চতুর্থবারের মতো সেদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন ২০২০ সালের ৯ আগস্ট। এর দুই বছর না ঘুরতেই অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে টালমাটাল হয়ে পড়ে দেশ। দেখা দেয় জনরোষ। শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভে অনেকে নিহতও হন। পরে ক্ষমতা হারান তিনি।
এরপর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে তুমুল বিক্ষোভে চলতি সপ্তাহে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের কথা জানান প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। চলমান সহিংস আন্দোলনের মধ্যেই তাঁর বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে যায় দেশটির মন্ত্রিসভা।
১২ মে রনিল রনিল বিক্রমাসিংহের প্রধানমন্ত্রীত্ব গ্রহণের পর জনবিক্ষোভ দেখা না গেলেও বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে শ্রীলঙ্কার সংকট কাটছে না বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। কারণ, দ্বীপরাষ্ট্রটির অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এ জন্য বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা প্রয়োজন। কিন্তু, রিজার্ভ নেই বললেই চলে। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র জ্বালানি সংকট।
এমন এক মুহূর্তে আজ শুক্রবার স্কুল বন্ধের পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তাদের বাসায় বসে অফিসের কাজ করার নির্দেশ দিল সেদেশের সরকার।