সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণীর মৃত্যু, ক্ষোভে ফুঁসছে ভারত
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়ে দিল্লির একটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৯ বছর বয়সী তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে পুরো ভারত। ১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে আজ মঙ্গলবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিকে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের ওই তরুণীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ন্যায়বিচারের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। হাসপাতালের বাইরেও বিক্ষোভ করেছে বহু মানুষ। অনেকেই এই ঘটনার সঙ্গে ২০১২ সালে দিল্লিতে মেডিকেল শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনার তুলনা করছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, যে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে তিনি দলিত সম্প্রদায়ের। আর অভিযুক্তরা হলো উচ্চবর্ণের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পাশাপাশি তাঁর ওপর নৃশংস অত্যাচার চালায় দুষ্কৃতকারীরা। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের জওহরলাল নেহরু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সোমবার স্থানান্তরিত করা হয় দিল্লির সফদর জং হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ধর্ষণের ঘটনায় এরই মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নেহরু হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, নির্মম অত্যাচার চালানো হয়েছে ওই তরুণীর ওপর। প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে। শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টাও করেছে দুষ্কৃতকারীরা। মুখমণ্ডলে একাধিক জায়গায় এবং জিভে কামড়ের গভীর ক্ষত রয়েছে। শিরদাঁড়া ও ঘাড় মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অবশ ছিল দুই পা এবং একটি হাত। আইসিইউতে রেখে সব রকম চেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পাঠানো হয় দিল্লির হাসাপাতালে।
ওই তরুণীর ভাই বলেন, ‘১৪ সেপ্টেম্বর হাথরস এলাকায় বাড়ির কাছেই একটি জমিতে মা ও আমার সঙ্গে জমিতে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন দিদি। বিকেলের দিকে আমি বাড়িতে চলে আসি। মায়ের থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন দিদি। সেই সময় পিছন থেকে দিদিকে আক্রমণ করে কয়েক জন দুষ্কৃতকারী। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টানতে টানতে ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে নৃশংস অত্যাচার চালায় এবং সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। পরে মা খুঁজতে খুঁজতে দিদিকে উদ্ধার করেন অচেতন অবস্থায়।’
পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, খুনের চেষ্টা, তফসিলি জাতি ও জনজাতি আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। সব তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে চলছে চার্জশিট তৈরির প্রক্রিয়া।