সাংহাইয়ের সব বাসিন্দার কোভিড পরীক্ষা, পাঠানো হলো হাজারও স্বাস্থ্যকর্মী

Looks like you've blocked notifications!
সাংহাইয়ে দুই ধাপের লকডাউন চলছে। ছবি : রয়টার্স

চীনের বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ের দুই কোটি ৬০ লাখ বাসিন্দার সবার কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানো হবে। বৃহৎ এ জনস্বাস্থ্য কর্মকাণ্ড সম্পন্নে সহায়তা করতে এরই মধ্যে সেখানে সামরিক বাহিনী এবং হাজার হাজার স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানো হয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

আজ সোমবার ভোর হওয়ার আগেই ঘুম থেকে ওঠানো হয় শহরের কিছু এলাকার বাসিন্দাদের। বাড়ির সামনে করা হয় কোভিডের নিউক্লিক অ্যাসিড পরীক্ষা। বাসিন্দাদের অনেককে পায়জামা পরে পরীক্ষার লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

চীনের সশস্ত্র বাহিনীর একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) গতকাল রোববার সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং যৌথ লজিস্টিক সাপোর্ট ফোর্সের দুই হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মীকে সাংহাইয়ে পাঠিয়েছে।

চীনের গণমাধ্যমসূত্রে খবর—জিয়াংসু, ঝেজিয়াং, বেইজিংসহ বিভিন্ন প্রদেশ থেকে ১০ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মীকে সাংহাইয়ে পাঠানো হয়েছে।  

চীনের উহানে ২০১৯ সালের শেষের দিকে নভেল করোনাভাইরাস প্রথম শসাক্ত হয়েছিল। এরপর সেখানে ব্যাপক জনস্বাস্থ্য সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কোভিডের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাব সামাল দেওয়া হয়। উহানের পর সাংহাইয়ে একই ধরনের ব্যাপক জনস্বাস্থ্য বিষয়ক ব্যবস্থা নিল চীন। হুবেই প্রদেশের উহানে সে সময় চার হাজারের বেশি চিকিৎসাকর্মী পাঠানো হয়েছিল।

সাংহাইয়ে গত সোমবার থেকে একটি দুই ধাপের লকডাউন শুরু হয়েছে। এ লকডাউনে শহরের বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে চলাচল সীমিত করা হয়েছে। সাইহাইয়ে গতকাল রোববার আট হাজার ৫৮১ জনের উপসর্গবিহীন এবং ৪২৫ জনের উপসর্গসহ কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। শহরের কর্তৃপক্ষ গতকাল বাসিন্দাদের অ্যান্টিজেন পরীক্ষার মাধ্যমে কোভিড পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে।

বৈশ্বিক মানদণ্ডে সাংহাইয়ের প্রাদুর্ভাবটি তেমন বড় না হলেও, শহরটি চীনের কোভিড নির্মূল কৌশলের কার্যকারিতার পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোভিডে আক্রান্তদের শনাক্তকরণ, তাদের ঘনিষ্ঠজনদের শনাক্তকরণ ও পরীক্ষা করা এবং আক্রান্তদের কোয়ারেন্টিনে নেওয়াকে কোভিড নির্মূল কৌশল হিসেবে প্রয়োগ করে আসছে চীন।

তবে, চীনের কোভিড নির্মূল কৌশল নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে। কোয়ারেন্টিন কেন্দ্রগুলোর জনাকীর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়ে অভিযোগের পাশাপাশি সেখানে খাদ্য সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা পেতে অসুবিধারও অভিযোগ করেছেন অনেকে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং অবশ্য ‘দ্রুততম সময়ে সংক্রমণ নির্মূল’ নীতিতে অটুট রয়েছেন। তিনি যত দ্রুত সম্ভব কোভিড প্রাদুর্ভাবের গতি রোধের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

চীন সরকার এরই মধ্যে ভাইস-প্রিমিয়ার সান চুনলানকে সাংহাই পাঠিয়েছে। সান চুনলান গত শনিবার মহামারি রোধে শহর কর্তৃপক্ষকে ‘দৃঢ়সংকল্প এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার’ আহ্বান জানান।

সাংহাই চীনের সবচেয়ে বড় শহর। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বর্তমানে কোভিড সংক্রমণের উদ্‌বেগজনক হার মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে শহরটি, যা থেকে শহরটিতে করোনার প্রাদুর্ভাবের মাত্রা আন্দাজ করা যায়।