সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বক্তব্যের পর মিয়ানমারের জাতিসংঘ দূত বরখাস্ত
মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা সামরিক জান্তাকে উৎখাতে সাহায্য প্রার্থনা করার একদিনের মাথায় জাতিসংঘে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে বরখাস্ত করেছে দেশটির ক্ষমতাসীনরা। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে গত শুক্রবার কিয়াও মো তুন সেনা অভ্যুত্থানে উৎখাত হওয়া ভোটে নির্বাচিত অং সান সু চি সরকারের প্রতিনিধিত্ব করার ঘোষণা দেন। লিখিত বিবৃতি পাঠকালে তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। সাধারণ পরিষদকে তিনি মিয়ানমারের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় যেকোনো কিছু করার কথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা পুনঃহস্তান্তরের আগ পর্যন্ত কারোই সামরিক জান্তাকে সহযোগিতা করা উচিত হবে না।
জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যের ফোরামে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এবং জনসাধারণের ওপর দমনপীড়ন বন্ধে সামরিক অভ্যুত্থান থামাতে অতিসত্ত্বর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো পদক্ষেপ আমাদের জন্য দরকার।’
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিয়াও মো তুনকে বীর আখ্যা দেন সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধীরা। অধুনা নির্বাচিত সরকারের পক্ষে দাঁড়িয়ে তিনি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে তাঁকে ধন্যবাদ জানান তাঁরা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই মিয়ানমারের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে আছে। সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছে হাজারও মানুষ।
মিয়ানমারে সামরিক জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারী যেমন বাড়ছে, বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের দমনপীড়নের ঘটনাও দিন দিন বাড়ছে। গতকাল শনিবারও ব্যাপক বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে। মারমুখী অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত সু চি সরকারের হয়ে বক্তব্য দেওয়ার পর ইয়াঙ্গুনসহ বিক্ষোভ হওয়া এলাকাগুলোতে পুলিশ আরও কঠোর অবস্থানে গেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গতকাল শনিবার ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে। এ ছাড়া মনওয়া শহরে এক নারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।