সোলেইমানির জানাজায় ট্রাম্পের মাথার জন্য পুরস্কার ঘোষণা (ভিডিওসহ)
গতকাল রোববার ইরানের মাশহাদ শহরে চলছিল ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস বাহিনীর কুদস ফোর্সের কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেইমানির জানাজা। এ সময় হঠাৎ করেই একজন আলেম টেলিভিশনে বলে ওঠেন, যে ব্যক্তি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাথা এনে দিতে পারবেন, তাঁকে ইরানি জনগণের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে পুরস্কার দেওয়া হবে। আর এ জন্য দেশটির আট কোটি জনগণের প্রত্যেকের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের আহ্বান জানান ওই ব্যক্তি।
ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা ৮০ মিলিয়ন ইরানি জনগণ। আমরা যদি প্রত্যেকেই এক মার্কিন ডলার করেও দেই, তাহলে মোট ৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ করা যাবে। আর যেই ব্যক্তি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাথা এনে দিতে পারবেন, তাঁকে ইরানি জনগণের মাধ্যমে সংগ্রহ করা ওই ৮০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে।’
ওই ব্যক্তির এমন বক্তব্য ইরানের একটি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এরপর মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমও প্রকাশ করে এ খবর। সংবাদমাধ্যম আল অ্যারাবিয়া এ খবর জানিয়েছে।
এরই মধ্যে আজ তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ প্রাঙ্গণে জেনারেল সোলেইমানির জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজা পড়ান ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। সেখান থেকে তাঁদের মরদেহ ইরানের দক্ষিণে ধর্মীয় নগরী কোমে নেওয়া হবে।
কোম নগরীতে জানাজার পর সোলেইমানির লাশ আগামীকাল মঙ্গলবার তাঁর জন্মস্থান কেরমান প্রদেশে নেওয়া হবে। এবং সেখানেই শেষ জানাজার পর তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী দাফন করা হবে।
গতকাল রোববার রাতে সোলেইমানির লাশ মাশহাদ শহর থেকে তেহরানে পৌঁছায়। এর আগে গতকাল ভোররাতে ইরাক থেকে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় আহওয়াজ বিমানবন্দরে পৌঁছায় জেনারেল সোলেইমানির লাশ। এ সময় আহওয়াজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইরানের শীর্ষস্থানীয় শত শত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
গত শনিবার ইরাকের কাজেমাইন, বাগদাদ, কারবালা ও নাজাফ শহরে জেনারেল সোলেইমানি এবং তাঁর সহযোদ্ধাদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ইরাকের লাখ লাখ মানুষ এসব জানাজায় অংশ নেয়।
গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় খুজিস্তান প্রদেশের কেন্দ্রীয় শহর আহওয়াজে জেনারেল সোলেইমানির জানাজা হয়। এরপর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মাশহাদ নগরীতে। সেখানে দুপুরে ইমাম রেজার মাজার প্রাঙ্গণে আরেক দফা জানাজা হয়।
গত শুক্রবার ভোররাতে ইরাকের রাজধানী বাগদাদ বিমানবন্দরে মার্কিন হামলায় জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হন। ওই হামলায় জেনারেল সোলেইমানির সঙ্গে ইরাকের জনপ্রিয় সরকারপন্থি স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী হাশদ আশ-শাবির উপপ্রধান আবু মাহদি আল-মুহান্দিসসহ দুই দেশের মোট ১০ জওয়ান ও কমান্ডার নিহত হন।
সম্প্রতি সিরিয়া ও ইরাকে মার্কিন বিমান হামলায় ২৫ হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহতের পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। নিহত হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের জানাজায় শরিক হয়ে বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধরা।
এর কয়েকদিন আগে ইরানের মদদপুষ্ট মিলিশিয়া গোষ্ঠী কাতায়েব হিজবুল্লাহ ইরাকের উত্তরাঞ্চলে মার্কিন এক ঠিকাদারকে হত্যা করে। মার্কিন ঠিকাদারকে হত্যার জবাবে বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তাতে ২৫ হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হন।