হাসপাতালের লিফটে চার দিন আটকা নারী
হাসপাতালের বহির্বিভাগে ডাক্তার দেখাতে এসে একটানা চার দিনের বেশি সময় লিফটে আটকে রইলেন এক নারী। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার নীল রতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, কলকাতাসংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার বাদুরিয়া থানার পশ্চিম চণ্ডীপুরের বাসিন্দা আনোয়ারা বিবি চিকিৎসার জন্য কলকাতার শিয়ালদহের কাছে নীল রতন সরকার মেডিকেল কলেজে যান। আনোয়ারা বিবির বয়স বছর ষাটের কোঠায়। তিনি স্নায়ুর সমস্যায় ভুগছিলেন। গত সোমবার সকালে একাই ট্রেনে করে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে একটু দূরের নীল রতন সরকার মেডিকেল কলেজের বহির্বিভাগে যান। সেখানে চিকিৎসককে দেখানোর জন্য লাইন দিয়ে টিকেট কাটেন। এরপর চিকিৎসককে দেখানোর জন্য ছোট লিফটে উঠতেই মাঝপথে আটকে যান তিনি। যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে ওপরে উঠতে গিয়ে মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় লিফট।
আনোয়ারা বিবির ছেলে আবুল হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘এক বোতল জল, আর একটা চিড়ার প্যাকেট নিয়ে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত আমার মা লিফটের মধ্যে আটকে ছিলেন। শুক্রবার দুপুরে কেউ একজন ফোন করে বলে, মা হাসপাতালের ফাঁড়িতে আছেন। এসে নিয়ে যান।’
আবুল হোসেন আরও বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে মা হাসপাতাল থেকে ফিরে না আসায় আমরা সব জায়গায় খুঁজেছি। হাসপাতালের ফাঁড়িতে গিয়ে শুনি মা লিফটে আটকে ছিলেন। লিফটের মধ্যে এক বোতল জল আর চিড়া খেয়েছেন। সেখানেই প্রস্রাব করেছেন। এমনটা কী করে হলো বুঝতে পারছি না।’
আবুল হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘আমরা মাকে কোথাও না পেয়ে স্থানীয় থানায় ডায়েরি করেছি। সোমবার সকাল ৮টা নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন মা। লিফট খারাপ হয়ে যাওয়ায় আটকে যান। তবে, মাকে খুঁজে পেয়ে আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাইনি। সোজা বাড়ি চলে এসেছি।’
গতকাল শনিবার বসিরহাটের বাদুড়িয়ার পশ্চিম চণ্ডীপুর গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ি ফিরে গেছেন আনোয়ারা বিবি।
এ ঘটনায় হাসপাতালের সুপারকে দফায় দফায় ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে সদুত্তর মেলেনি।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘এনআরএসের মতো হাসপাতালে লিফটের মধ্যে একজন নারী আটকে রইলেন সোমবার দুপুর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত, কিন্তু কেউ জানতেও পারল না? এটা কী করে সম্ভব!’
এ ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন ডা. অজয় চক্রবর্তী।