৮০ বছরের স্মৃতি ফিরিয়ে আটলান্টিক সনদে সই বাইডেন-জনসনের
যুক্তরাজ্যে স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হলো। ১৯৪১ সালের স্মৃতি ফিরিয়ে আনলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সই করলেন নতুন আটলান্টিক সনদে। আশি বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে আটলান্টিক সনদে প্রথম সই করেছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট। সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।
জো বাইডেন বৃহস্পতিবারই যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম আনুষ্ঠানিক বিদেশ সফর। আজ শুক্রবার থেকে যুক্তরাজ্যে শুরু হচ্ছে জি৭ সম্মেলন। তার আগে গতকাল জনসন ও বাইডেন প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক করেন কর্নওয়ালে। বৈঠক শেষে দুই রাষ্ট্রপ্রধান জানান, ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আটলান্টিক সনদে সই করার পাশাপাশি রাশিয়া, চীন নিয়েও তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে জি সেভেনে আলোচনা করতে চান বাইডেন। ট্রান্স-আটলান্টিক পলিসি, রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সমঝোতা এবং চীন নিয়ে ঐক্যমত্য। এ ছাড়া করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্বের গণতান্ত্রিক ভারসাম্য নিয়েও জি সেভেনে আলোচনা হওয়ার কথা।
বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে এবারের জি সেভেনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বরিস জনসন। তার মধ্যে ইউরোপের দেশগুলোর পাশাপাশি ভারতও আছে। করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্বে গণতন্ত্র কীভাবে সুরক্ষিত থাকবে, গণতান্ত্রিক পন্থায় কীভাবে মানুষকে ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নেওয়া যাবে–এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।
জনসন ও বাইডেন যে আটলান্টিক সনদে সই করেছেন, সেখানে অবশ্য রাশিয়া ও চীনের প্রতি তাদের মনোভাব নিয়ে নীতি তৈরি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার দীর্ঘদিন ধরেই শীতল-উষ্ণ সম্পর্ক। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একনায়কোচিত মনোভাব যুক্তরাষ্ট্র পছন্দ করে না। জো বাইডেন চাইছেন, ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় এসে রাশিয়ার বিরুদ্ধে শক্তি গড়ে তুলতে। চীনের ক্ষেত্রেও একই নীতি নিতে চাইছেন তিনি।
কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রাশিয়ার ক্ষেত্রে ঐক্যমত্য সম্ভব হলেও, চীনের বিরুদ্ধে তা গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। কারণ, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে সায় দিয়েছে জার্মানি ও ফ্রান্স। বাজারের কথা মাথায় রেখে তারা এমন কিছু করবে না, যাতে চীন বেঁকে বসে।
জি সেভেনের পর ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন-যুক্তরাষ্ট্র সম্মেলনে যাওয়ার কথা বাইডেনের। তারই মধ্যে আগামী বুধবার পুতিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হতে পারে বাইডেনের। বৈঠক হতে পারে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল এবং ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গেও।