অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিলেন লিঙ্গান্তরিত নারী
ভারতের প্রথম লিঙ্গান্তরিত নারী অধ্যক্ষ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের একটি কলেজের দায়িত্ব নিলেন মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল মঙ্গলবার নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন তিনি। এর আগে মানবী পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রামের একটি কলেজে অধ্যাপনা করতেন। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে এই কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়।
পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তরের পর জীবনে নানা ঝড়-ঝঞ্ছা মোকাবিলা করতে হয়েছে মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। চলার পথে বিভিন্ন সময়ে ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে অবশেষে মানবী অধ্যক্ষের ভূমিকায় জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করলেন।২০১২ সালে অধ্যক্ষ চন্দাশুক্লা হাজরা বদলি হয়ে যাওয়ার পর থেকে এই কলেজে কোনো স্থায়ী অধ্যক্ষ ছিলেন না। বিভিন্ন সময়ে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকারাই দায়িত্ব সামলে এসেছেন। এবার মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগদানে স্থায়ী অধ্যক্ষ পেল কলেজটি।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় কলেজে উপস্থিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বুলু মোদকের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেন। প্রথম দিনই তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান কলেজের শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীরা। কাজে যোগ দিয়ে মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘এর আগে দীর্ঘদিন অধ্যাপনার কাজ করেছি। এবার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পেলাম। আমি একজন নারী হিসেবেই আবেদন করেছিলাম। সরকার আমার আবেদন খারিজ করে দেয়নি। আমি কৃতজ্ঞ। সরকার আমার যোগ্যতাকে মর্যাদা দিয়েছে। আমার পথ খুঁজে দিয়েছে।’ কলেজের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি দেবেন এবং তাদের সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে জোর দেবেন বলেও তিনি এ সময় জানান।
কৃষ্ণনগরের উইমেন্স কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় যোগদান করায় স্বাগত জানিয়েছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। কৃষ্ণনগরের উইমেন্স কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা রাজ্যের কারিগরী শিক্ষামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমরা একজন সুদক্ষ শিক্ষিকা হিসেবেই দেখছি।’