মিয়ানমারে ভারতের হামলা, পরামর্শ দিল যুক্তরাষ্ট্র
মিয়ানমারে ঢুকে ভারতের সেনাভিযানে সীমান্তবর্তী দেশগুলোর মধ্যে এক ধরনের উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এতে আঞ্চলিক সীমান্ত সতর্কতা জোরদার করা হয়েছে। আর এ ঘটনাবহুল ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ উদ্বেগজনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দেশ দুটির বিশেষ উদ্যোগ ও সংলাপের আহ্বান করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ ধরনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে সমর্থন করবে কি না– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে গতকাল শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জেফ রাতকে বলেন, ‘এই ধরনের নির্দিষ্ট অভিযানের বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। কিন্তু উত্তেজনা কমাতে আমরা ভারত-পাকিস্তানকে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, জঙ্গি ও সন্ত্রাস রোখার ক্ষেত্রে ভারত-পাকিস্তানের পারস্পরিক স্বার্থ রয়েছে।’
ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, পাকিস্তানে সেভ দ্য চিল্ড্রেনের কার্যালয়ে জঙ্গি হামলার ব্যাপারেও যুক্তররাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রাতকে বলেন, সেভ দ্য চিল্ড্রেন একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা, যারা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে।
গত ৯ জুন মিয়ানমার সীমান্তের ভেতরে ঢুকে সামরিক অভিযান চালায় ভারত। ‘বিদ্রোহীদের আস্তানায়’ চালানো ওই হামলায় কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যের সীমান্তবর্তী মিয়ানমার ভূখণ্ডে এ অভিযান চালানোর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি দেশটির সেনাবাহিনী। তবে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনসের অতিরিক্ত পরিচালক মেজর জেনারেল রণবীর সিং সাংবাদিকদের ওই দিন জানিয়েছিলেন, ‘ভারত ভূখণ্ডে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিল বলে গ্রহণযোগ্য ও সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিদ্রোহীদের মোকাবিলা করা হয়েছে।’
১০ জুন মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত গৌতম মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেশটির কর্তৃপক্ষের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মিয়ানমার কড়া ভাষায় ওই হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযানে মনোভাবের পরিবর্তন হয়েছে বলে ১১ জুন দেশটির কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকার মন্তব্য করেন। পাকিস্তানের প্রতি খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা এরই মধ্যে ভারতের নতুন অবস্থানকে ভয় পায়, তারাই প্রতিক্রিয়া করছে। চিন্তার আদল বদলে গেলে অনেক কিছু বদলে যায়। গত দুই-তিন দিনে আপনারা এটা দেখেছেন। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সহজ একটি অভিযানের ফলে দেশের সার্বিক নিরাপত্তার সম্পর্কে মনোভাব বদলে গেছে।’ তবে এ ধরনের মন্তব্যের বিষয়ে সতর্ক করেছে পাকিস্তান।