নিজেকে সাচ্চা মুসলমান দাবি কট্টর হিন্দু নেতার
ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সাংসদ ও কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা সাক্ষী মহারাজ দাবি করেছেন, তিনি একজন সাচ্চা মুসলমান।
আজ সোমবার সাক্ষী মহারাজ উত্তর প্রদেশের একটি টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, ‘মুসলিম হলেন এমন একজন যাঁর ইমান রয়েছে, সে জন্যই তিনি মুসলমান। আমি একজন সাচ্চা মুসলমান।’
ওই চ্যানেলকে দেওয়া বক্তব্যে উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী আজম খানকে একচোট নেন একই রাজ্যের উন্নাও আসনের বিজেপির এই সাংসদ। যিনি আরেক কট্টরপন্থী হিন্দু ধর্মীয় গুরু ও বিজেপির এমপি যোগী আদিত্য নাথকে নামাজ পড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এর জবাবে কট্টরপন্থী হিসেবে পরিচিত সাক্ষী মহারাজ বলেন, “হিন্দুদের আল্লাহর নাম নিতে সমস্যা নেই, কারণ তাঁরা বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে। কিন্তু আজম খানের যদি বুকের পাটা থাকে তো তিনি ‘জয় শ্রী রাম’ বলে দেখাক এবং নিজেকে একজন খাঁটি ভারতীয় প্রমাণ করুক।”
এদিকে আগামী ২১ জুন বিশ্ব যোগ দিবস উপলক্ষে ভারতে সুর্য প্রণাম নিয়ে ইতিমধ্যে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ওই দিন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সব স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের যোগ দিবস পালনের যে নির্দেশ দিয়েছে, তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুসলিম ল বোর্ড। যোগ দিবসে সূর্য প্রণামের বিরুদ্ধে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
আর সরকারের পরিকল্পনায় সারা ভারতে যোগ দিবসের আগে বিজেপির এই সাংসদের মন্তব্য, ‘যাঁরা সূর্য নমস্কার করতে চান না, তাঁদের সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়া উচিত।’
এর আগেও বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন হালে রাজনীতিবিদ কট্টরপন্থী এই ধর্মীয় নেতা। সর্বশেষ ধর্ম বাঁচাতে হিন্দু মহিলাদের চারটি করে সন্তান প্রসবের নিদান দিয়েছিলেন তিনি।
উত্তর প্রদেশে একটি ধর্মীয় সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আমি হিন্দু নারীদের আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন কমপক্ষে চারজন শিশুর জন্ম দেন।’ এরপর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেত্রী সাধ্বী প্রাচী মধ্য প্রদেশে একটি হিন্দু সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘হিন্দু ধর্ম সংকটে। একটি সন্তানে দেশ রক্ষা সম্ভব হবে না, এ জন্য চার সন্তানের জন্ম দিতে হবে।’
তাঁর ওই মন্তব্যে জনসংখ্যার ভারে জর্জরিত ভারতের রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। চাপে পড়ে বিজেপি প্রেসিডেন্ট অমিত শাহ বিবৃতি দেন, ওটা সাক্ষী মহারাজের ব্যক্তিগত মত, এর সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই।’
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই অযোধ্যায় দর্শনীয় রামমন্দির তৈরি হবে বলেছিলেন তিনি। তিনি বলেন, “এর আগে ‘রামলালা’ যেখানে ছিল সেখানেই থাকবে। কিন্তু সেখানে ‘বাবরি’ নামে একটি পাথরও রাখতে দেওয়া হবে না।”
এর আগে মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে দেশপ্রেমী এবং কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গান্ধীকে ‘পাগল’ আখ্যা দিয়ে তাঁকে সংসদে ক্ষমাও চাইতে হয়।