এরদোয়ানের একচ্ছত্র ক্ষমতা তুরস্ককে কোথায় নেবে?

Looks like you've blocked notifications!
তুরস্কের গণভোটে জয়ের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ছবি : বিবিসি

তুরস্কের গণভোটে জয় পেয়েছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এই জয়ের ফলে দেশটির সংবিধান সংস্কারে একচ্ছত্র ক্ষমতা পেলেন তিনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা হবে আধুনিক তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংস্কার।

গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত ভোটে সংবিধান সংস্কারের পক্ষে ‘হ্যাঁ ভোট’ পড়ে ৫১ শতাংশের কিছু বেশি। খুব অল্প ব্যবধানে জেতার পরও সংবিধান সংস্কারের পথে এরদোয়ানের আর কোনো বাধা থাকল না।

ফলাফল আসার আগেই নিজেকে বিজয়ী দাবি করেছিলেন এরদোয়ান। সে সময় পর্যন্ত ৯৯ শতাংশ ভোট গণনা শেষ হয়েছিল। আর তাতে ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে ছিল ৫১ দশমিক ৩৫ ভাগ আর ‘না’ ভোটের পক্ষে পড়েছে ৪৮ দশমিক ৬৫ ভাগ ভোট।

এদিকে এরদোয়ানের জয়লাভের পর ফলাফল চ্যালেঞ্জ করবে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)। ফলাফলের কম ব্যবধানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা। এ ছাড়া নির্বাচনী পদ্ধতিতেও অনিয়মের অভিযোগ করেছে সিএইচপি। তারা অন্তত ৬০ শতাংশ ভোট পুনর্গণনার দাবি জানিয়েছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটিতে বিভক্তি আরো বাড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে ভোটের ফল সবাইকে মেনে নিতে বলেছেন এরদোয়ান।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দু-একটি জায়গায় সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে এবং দিয়ারবাকির এলাকায় ভোটকেন্দ্রের কাছে গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন।

সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন। এ ছাড়া দুই মেয়াদ ক্ষমতায় থাকতে পারবেন প্রেসিডেন্ট। এতে ২০২৯ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন এরদোয়ান। সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রীসহ সরকারি কর্মকর্তাদের সরাসরি নিয়োগ দিতে ও এক বা একাধিক ভাইস প্রেসিডেন্ট মনোনীত করতে পারবেন প্রেসিডেন্ট। সংবিধান সংশোধনের পর প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বিলুপ্ত করা হবে। বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা থাকবে প্রেসিডেন্টের। এ ছাড়া জরুরি অবস্থা জারি করা হবে কি না, সিদ্ধান্তও নিতে পারবেন প্রেসিডেন্ট।

এ ছাড়া আরো কিছু পরিবর্তন আসতে পারে তুরস্কে। এর মধ্যে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের বিধান আবার চালু হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন এরদোয়ান। এর ফলে তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চলমান আলোচনা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এরদোয়ান ক্ষমতায় আসার পর দেশটির মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর বেশ উন্নতি হয়েছে। এ ছাড়া দেশটির সামগ্রিক পরিকাঠামোও উন্নত হয়েছে। একই সঙ্গে ধর্মীয় নেতারা দেশটির বিভিন্ন ক্ষমতায় বসেছেন। অন্যদিকে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে ইইউর সঙ্গে।

২০১৬ সালের জুলাই মাসে এরদোয়ানের বিরুদ্ধে সেনা অভ্যুত্থান হয়। ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন তিনি। এরপর তুরস্কের অন্তত এক লাখ সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা চাকরি হারিয়েছেন। কারাগারে নেওয়া হয় কয়েক হাজার মানুষকে।