মৃত্যুর আগে স্বামীর চিৎকার ফোনে উপভোগ করেন স্ত্রী!

Looks like you've blocked notifications!

অনুপম সিংহের মাথা রড দিয়ে থেঁতলে দিলেন অজিত রায়। আকস্মিক এ রকম ঘটনায় অনুপমের চিৎকারে আকাশ ভারী হয়ে এলো। অজিত পকেটে থাকা মোবাইল ফোনটা চালু করে আহত অনুপমের সামনে ধরল। অনুপমের আর্তচিৎকার মোবাইল ফোনে কেউ শুনছে! এরপর রড দিয়ে অনুপমের মুখ থেঁতলে দিলেন অজিত। মোবাইল ফোন চালু আছে। অনুপমের নাক ভাঙা হলো। অনুপমের গোঙানি থামেনি। মৃত্যু নিশ্চিত করতে অনুপমের হাতের রগ কেটে দেন অজিত।

মোবাইল ফোনে অনুপমের শেষ চিৎকার ‘লাইভ’ শুনিয়েছেন অজিত। আর তা শুনেছেন অনুপমের স্ত্রী মনুয়া মজুমদার! অজিতের সঙ্গে মনুয়ার ছিল পরকীয়া সম্পর্ক। আর অনুপমের শেষ আর্তচিৎকার ফোনে শুনতে চেয়েছিলেন মনুয়া। প্রেমিক অজিতের কাছে এটা ছিল তাঁর আবদার!

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসতের হৃদয়পুরে ওই ঘটনা ঘটে। গত ২ মে ওই এলাকায় নিজ বাসায় খুন হন অনুপম সিংহ (৩২)। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পুলিশ অজিত রায় ও মনুয়া মজুমদারকে আটক করেছে। উভয়ের কাছ থেকেই ওই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা পেয়েছে পুলিশ।

জানা যায়, অনুপমের আদি বাড়ি ছিল বাংলাদেশে। বেশ কয়েক বছর আগে অনুপম ভারতে এসে বারাসতের হৃদয়পুরে নিজে বাড়ি করে। কলকাতার একটি মানি এক্সচেঞ্জারের পাশাপাশি ট্রাভেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অনুপম। টানা ছয় বছর ধরে প্রেম করার পর বছর দেড়েক আগে মনুয়াকে বিয়ে করেন অনুপম। মনুয়ার বাড়ি বারাসতের নবপল্লী এলাকায়।

এদিকে অনুপমের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করলেও কলেজ জীবনের বন্ধু অজিত রায়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক বজায় রাখেন মনুয়া। অজিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগরের বাসিন্দা। তবে এ ব্যাপারে কিছুই জানতে পারেনি অনুপম।

পুলিশ জানায়, মাস খানেক আগে অনুপমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন অজিত ও মনুয়া। উভয়ে মনে করছিলেন তাঁদের প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অনুপম।

গত ২ মে সন্ধ্যায় অফিস থেকে বারাসতের নবপল্লীতে শ্বশুরবাড়ি যান অনুপম। রাতে শ্বশুরবাড়িতে খাওয়া দাওয়া সেরে একাই হৃদয়পুরের বাড়িতে ফিরে আসেন। মনুয়া ওই রাতে স্বামী অনুপমের সঙ্গে বাড়িতে ফেরেননি।

ওই রাতেই অনুপমের বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন অজিত। অনুপম ঘরে ঢোকার পরই রড দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে অজিত। এরপর ওই রড দিয়ে পিটিয়ে অনুপমকে হত্যা করা হয়। আর দূরে বসে মোবাইল ফোনে অনুপমের শেষ চিৎকার শোনেন মনুয়া।

চলে যাওয়ার সময় অনুপমের আঙুলের আংটিটি নিয়ে যায় অজিত। ওই আংটির সূত্র ধরেই খুনের কিনারা পায় পুলিশ।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, খুনের পর মনুয়া এত ঠান্ডা ছিল যে দেখে বোঝাই যাচ্ছিল না যে আসলে ওই ছিল অনুপম হত্যাকাণ্ডের নাটের গুরু!