ফের ইরানের রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন রুহানি
ইরানের বর্তমান রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। দেশটিতে গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল এমন আভাসই দিয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, উদারপন্থী রুহানি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীকে ভালো ব্যবধানে হারিয়ে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
নির্বাচন কর্মকর্তা আলী আসগর আহমাদী জানিয়েছেন, দুপুর ২টার দিকে (স্থানীয় সময় সাড়ে ৯টা) চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হতে পারে।
দ্বিতীয় মেয়াদের রুহানির বিজয় ইরানের নাগরিকদের আরো সামাজিক-অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দেবে বলে মনে করেন তাঁর সমর্থকরা।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে মোট ভোটর ছিল পাঁচ কোটি ৬০ লাখ। এর মধ্যে প্রায় চার কোটি ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। রুহানি পেয়েছেন প্রায় দুই কোটি ৩০ লাখ ভোট আর রুহানির প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক বিচারপতি ইব্রাহিম রাইসি পেয়েছেন এক কোটি ৫৫ লাখ ভোট।
ইব্রাহিম রাইসি দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ৫৬ বছর বয়সী ইব্রাহিম রাইসি অভিযোগ করেছেন, রুহানির সমর্থকরা ভোটের বুথগুলোতে প্রচার চালিয়েছে, যা নির্বাচনী আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ।
এর আগে ২০১৩ সালে রুহানি যখন প্রথমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন, তখন দেশটি পারমাণবিক ইস্যুতে বেশ কোণঠাসা ছিল। কিন্তু তাঁর সময়ে এ ব্যাপারে বেশ কিছু অগ্রগতি হয়। এবার পুনরায় নির্বাচনের প্রচারণায় ৬৮ বছর বয়সী রুহানি তাঁর উদারপন্থী দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানিয়েছিলেন।
রয়টার্স জানায়, রুহানির বিজয়ের সংবাদকে তাঁর এক সমর্থক উষ্ণভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি আশা করেন, রুহানি আরো বেশি সামাজিক-অর্থনৈতিক স্বাধীনতা প্রদান করবেন। ২০১৩ সালে প্রথমবার নির্বাচিত হওয়ার পর রুহানি অর্থনৈতিক পতন ও নানামুখী চাপের সম্মুখীন হয়েছিলেন বলে ওই সমর্থক উল্লেখ করেন।
‘রুহানির বিজয়ে আমি খুবই খুশি। আমরা জিতেছি। আমরা তাদের দেখিয়েছি এখনো আমাদের অস্তিত্ব আছে’, বলেন ৩৭ বছর বয়সী সংস্কারবাদী মাহনাজ। তিনি বলেন, ‘আমি চাই রুহানি তাঁর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করুক।’
এর আগে ২০১৫ সালের জুলাইয়ে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তি যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে সমঝোতা হয়। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে শত শত কোটি মার্কিন ডলারের জব্দ করা ইরানের সম্পদ ছেড়ে দেওয়া হবে এবং দেশটি বিশ্ববাজারে তেল বিক্রি করতে পারবে।
তবে চুক্তি সইয়ের কয়েক ঘণ্টা পরই আবার ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি এই যুক্তি দেখিয়ে সে সময় নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তিটির ব্যাপারে অসম্মতি জানালেও গত সপ্তাহের শুরুতে হোয়াইট হাউস সেটিকে নবায়ন করেছে।