মহারাষ্ট্রে মাদ্রাসাকে সরকারের ‘ফতোয়া’
ভারতের মহারাষ্ট্রের মাদ্রাসা এবং ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে স্কুলের মর্যাদা দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে সরকার। প্রদেশটির বিজেপি-শিবসেনা জোট সরকারের সিদ্ধান্ত, যেসব মাদ্রাসায় ইংরেজি, গণিত আর বিজ্ঞান পড়ানো হবে না, সেগুলো স্কুলের মর্যাদা পাবে না। আর সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমবহির্ভূত শিক্ষার্থী বলে বিবেচনা করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে গত সপ্তাহে একটি সরকারি নির্দেশিকা জারি হয়েছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী ৪ জুলাই থেকে মাদ্রাসাগুলোর অবস্থান খতিয়ে দেখার কাজও শুরু হবে।
মাদ্রাসা নিয়ে প্রদেশটির সরকারের এই কড়া অবস্থানে এরই মধ্যে ভারতে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কংগ্রেস সরকারের এ সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে। কংগ্রেস জানিয়েছে, রাজ্যে সরকারি নথিভুক্ত মাদ্রাসার সংখ্যা এক হাজার ৮৯৫টি। আর এতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমপক্ষে দুই লাখ। সরকারের এ সিদ্ধান্তে এই বিপুল শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।
মহারাষ্ট্রের প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র সঞ্জয় নিরুপমা বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে কোনো শিশুর সঙ্গে বৈষম্য করা চলে না। রাজ্য বিধানসভায় এই ইস্যু তুলে ধরার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
জামায়াত উলেমা-ই-হিন্দের সাধারণ সম্পাদক মৌলানা মুহাম্মদ মাদানি বলেন, ‘যা হচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। এর মধ্যেই রাজ্যের মুসলিমদের আস্থা হারাতে শুরু করেছে মহারাষ্ট্র সরকার।’
অল ইন্ডিয়া মজলিস এ ইত্তেহাদুল মুসলেমিনের সভাপতি আসাউদ্দিন ওয়াইসির দাবি, বহু মাদ্রাসায় অঙ্ক, ইংরেজি ও বিজ্ঞান পড়ানো হয়। সেসব মাদ্রাসার ছাত্ররা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাস করেছেন, এমন উদাহরণও রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে প্রদেশের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী একনাথ খাডস বলেছেন, ‘ভারতের সংবিধান অনুযায়ী প্রতিটি শিশুর প্রচলিত শিক্ষা পাওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু মাদ্রাসার শিশুরা এই শিক্ষা পাচ্ছে না। এখানে অঙ্ক, ইংরেজির মতো প্রচলিত শিক্ষাগুলো উপেক্ষিত। এর পরিবর্তন আসা উচিত।’
মুসলিম শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই সরকারের এ সিদ্ধান্ত দাবি করে একনাথ খাডস আরো বলেন, ‘প্রচলিত শিক্ষা না পেয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে সংখ্যালঘু (মুসলিম) ছাত্রছাত্রীরা। তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’