ফিলিস্তিনি শিশুকে স্তন্যদান করলেন ইসরায়েলি নার্স

ফিলিস্তিনের রাস্তায় শিশু-কিশোর-যুবা-বৃদ্ধের লাশ, অসহায় কোনো নারীর সামনে অস্ত্র তাক করা উর্দি পরা সেনা, বাড়ি হারিয়ে হা-হুতাশ করা বৃদ্ধের হাহাকার আমাদের ইসরায়েল নামক একটি রাষ্ট্রের কথা মনে করিয়ে দেয়। মধ্যপ্রাচ্যের এই রাষ্ট্রটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কোটি কোটি মানুষের কাছে ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখলকারী, নিপীড়ক হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু সেই ইসরায়েলেও যে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মী লোকজন আছে, তারই জলজ্যান্ত প্রমাণ দিলেন ওলা অসত্রোউস্কি-জাক নামের এক নার্স। মাতৃদুগ্ধ না পাওয়া ফিলিস্তিনি এক শিশুকে নিজের স্তন্যপান করিয়ে মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ইসরায়েলি এই নারী।
সম্প্রতি ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে বাসের সঙ্গে গাড়ির দুর্ঘটনার শিকার হয় ৯ মাস বয়সী শিশু ইয়ামান ও তার মা-বাবা। দুর্ঘটনায় শিশুটির বাবা নিহত হন। গুরুতর আহত হন তার মা।
দুর্ঘটনার পর শিশুসহ তার মাকে গত ২ জুন জেরুজালেমের হাদাসাহ আইন কারেম মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিজেই জীবনযুদ্ধে থাকা মায়ের পক্ষে শিশুটির দিকে নজর দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে সাত ঘণ্টা ধরে কান্নাকাটি করছিল দুধের শিশুটি। কোনো বোতলে করেও তাকে দুগ্ধপান করানো সম্ভব হচ্ছিল না। আর সেই অবস্থাতেই হাল ধরলেন হাসপাতালের নার্স ওলা।
সংবাদমাধ্যম টুডে ডটকমকে ১৮ মাস বয়সী এক সন্তানের মা ওলা বলেন, ‘আমি নিজে নিজে ভাবলাম, এই শিশুটিকে অবশ্যই সাহায্য করতে হবে।’
‘আমি তার প্রতি অন্য রকম এক টান অনুভব করলাম। মনে হলো যেন আমার সন্তান আয়ামকে পান (স্তন্যপান) করাচ্ছি।’
হাসপাতালে নিজের শিফট শেষ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন ওলা। সেখানে তিনি ইয়ামানকে সাহায্য করতে অন্য মায়েদের আহ্বান জানান। তাঁর এই স্ট্যাটাসটিতে লাইক, কমেন্ট পড়েছে হাজার হাজার।
‘মানুষের প্রতি মানুষের টান খুবই শক্তিশালী’, বলেন ওলা।
নার্সের অকৃত্রিম সেবা পাওয়ার দুই দিন পর হাসপাতাল থেকে অধিকৃত হেবরনে পরিবারের কাছে ফিরে যায় ইয়ামান। তবে গুরুতর আহত তার মা হাসপাতালেই থাকেন। তবে আশার কথা হলো, তিনিও আশঙ্কামুক্ত।