সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় প্রথম হলেন প্রতিবন্ধী নারী

Looks like you've blocked notifications!
ভারতের সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) পরীক্ষায় প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে সেরার স্থান লাভ করেছেন ইরা সিঙ্ঘল। ছবি: টাইমস অব ইন্ডিয়া

ভারতের সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) পরীক্ষায় প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে ফলাফলের তালিকায় সেরার স্থান দখল করেছেন অদম্য মেধাবী নারী ইরা সিঙ্ঘল।

দিল্লির বাসিন্দা ইরা ডাক্তারি ভাষায় ৬২ শতাংশ চলাচলে অক্ষম। তবে ২৯ বছর বয়সী এই নারীকে থামিয়ে রাখতে পারেনি তাঁর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। ২০১০ সালে তিনি ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস পরীক্ষায় সফল হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়নি। কারণ, কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি শারীরিকভাবে এই চাকরির জন্য সক্ষম নন। কিন্তু প্রতিকূলতার কাছে হার মানেননি ইরা। তিনি আবারও প্রমাণ করেছেন নিজের মেধা ও যোগ্যতার শ্রেষ্ঠত্ব। কেন্দ্রীয় প্রাশাসনিক ট্রাইবুনালের সহায়তায় তিনি যে শারীরিকভাবে সক্ষম, সেই রিপোর্ট জমা দেন। তারপর দুই বছর ইরা নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেন কর্মক্ষেত্রে। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে সবাই এ কথা মানতে বাধ্য হন যে তিনি শারীরিকভাবে সক্ষম। 

ইরা পরীক্ষায় নিজের প্রস্তুতি নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন। ফল যে ভালো হবে, সে ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন তিনি। তবে একেবারে যে প্রথম হওয়াটা তার কাছে অপ্রত্যাশিত। ফল প্রকাশের দিন প্রথমে একজন বন্ধুর থেকে ইরা সুখবরটি পান।

ইরা জানিয়েছেন, তিনি একজন দক্ষ আইএএস অফিসার হতে চান। তিনি বলেছেন, ‘আমি সত্যিই ভীষণ খুশি। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না। আমি এই পরীক্ষার জন্যই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আমি আইএএস অফিসার হতে চাই। দেশে যত শারীরিক প্রতিবন্ধী আছে, তাঁদের জন্য কিছু ভালো কাজ করতে চাই।’

এবারের আইসিএস পরীক্ষায় দেশটিতে নারীদেরই জয়জয়কার। ভারতীয় প্রশাসনিক সেবা (আইএএস) ও ভারতীয় পুলিশ সেবা (আইপিএস) হওয়ার পরীক্ষা সিভিল সার্ভিসে প্রথম হওয়া চারজনই নারী। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন দিল্লির ইরা সিঙ্ঘল। দ্বিতীয় স্থানে কেরলের রেণু রাজ। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক। আর তৃতীয় স্থানে দিল্লির আরেক পরীক্ষার্থী, নিধি গুপ্ত। চতুর্থ হয়েছেন বন্দনা রাও।

প্রথম স্থানাধিকারী ইরা ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস (আইআরএস) অফিসার হিসেবে কর্মরত। 

দ্বিতীয় স্থানাধিকারী কেরলের রেণু রাজ পেশায় চিকিৎসক। কোট্টায়াম-নিবাসী রেণু কোল্লমের একটি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন দিল্লির নিধি গুপ্ত, যিনি ইরার মতোই আইআরএস অফিসার। বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় শুল্ক ও আবগারি দপ্তরে অ্যাসিসট্যান্ট কমিশনার পদে কর্মরত। এই তিনজনের পাশাপাশি দিল্লির আরেক মহিলা পরীক্ষার্থী বন্দনা রাও চতুর্থ স্থান দখল করেছেন। পঞ্চম স্থান দখল করেছেন একজন পুরুষ, সুহর্ষ ভগত। তিনিও পেশায় আইআরএস অফিসার।

ইউপিএসসির তরফে জানানো হয়েছে, এ বছর এক হাজার ২৩৬ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ শ্রেণিতে ৫৯০ জন, অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণিতে ৩৫৪ জন। এ ছাড়া, তফশিলি জাতি ও তফশিলি উপজাতি শ্রেণিতে যথাক্রমে রয়েছেন ১৯৪ ও ৯৮ জন। সফল পরীক্ষার্থীদের টুইটারে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।