বাচ্চা প্রসবে থামল অ্যাম্বুলেন্স, ঘিরে ধরল ১২ সিংহ!

Looks like you've blocked notifications!
গুজরাটের বাসিন্দা মাঙ্গুবেন মাকবানাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়ার সময় ঘিরে ধরে ১২টি সিংহ। আর সিংহ ঘিরে ধরা অবস্থায়ই মাঝপথে বাচ্চা প্রসব করেন তিনি। প্রতীকী ছবি

ভারতের গুজরাট রাজ্যের বাসিন্দা মাঙ্গুবেন মাকবানা (৩২)। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে প্রচণ্ড প্রসব বেদনা নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে পরিবারের সঙ্গে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন তিনি। পথে প্রসব বেদনা তীব্র হওয়ায় একটি বনের ভেতর রাস্তায় থামাতে হয় অ্যাম্বুলেন্সটিকে। এরপরই ঘটে ভয়াবহ কাণ্ড।

সড়কে রাখা অ্যাম্বুলেন্সকে ঘিরে ঘুরঘুর করতে থাকে ১২টি সিংহ। আর এর মধ্যেই সন্তান প্রসব করেন মাকবানা।

ভারতের জরুরি মেডিকেল সার্ভিস ‘১০৮’-এর জরুরি ব্যবস্থাপনা নির্বাহী (ইএমই) চেতন গাড়ে  জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে একটি  অ্যাম্বুলেন্সে করে আম্রেলি জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামের মধ্য দিয়ে জাফরাবাদ সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল মাঙ্গুবেনকে। এ সময় গির জঙ্গলের মাঝপথে তাঁকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি থামার পর ঘিরে ধরে ১২ সিংহের একটি দল। তার নিকটাত্মীয়রা এ ঘটনায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। তবে সাহস হারাননি অ্যাম্বুলেন্সে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী। তিনি পরিস্থিতি সামলে মাকবানার সন্তান প্রসবে সহায়তা করেন।

‘মাঙ্গুবেনকে নিয়ে জাফরাবাদে যাওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্সে ছিলেন জরুরি ব্যবস্থাপনা টেকনিশিয়ান (ইএমটি) অশোক মাকবানা। অশোক বুঝতে পারেন, মাঙ্গুবেন মাকবানা যেকোনো সময় সন্তান প্রসব করতে পারেন। কারণ তিনি দেখতে পাচ্ছিলেন শিশুটির মাথা বাইরের দিকে বেরিয়ে আসছে। তাই তিনি জরুরি ভিত্তিতে চালক রাজু যাদবকে মাঝপথে গাড়ি থামাতে বলেন।’

গাড়ি থামানোর পর অশোক যখন চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন, ঠিক তখনই সিংহের দল তাদের ঘিরে ধরে। এ বিষয়ে চেতন গাড়ে বলেন, ‘যাদব স্থানীয় হওয়ায় সিংহদের আচরণ বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি সিংহগুলোকে বারবার তাড়ানোর চেষ্টাও করেন। কিন্তু এগুলো কোনোভাবেই সরতে চাচ্ছিল না। এদের মধ্যে কয়েকটা সিংহ আবার গাড়ির সামনে গিয়ে পথ আগলে দাঁড়ায়।’

এর পর অশোক ফোনে চিকিৎসকের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী মাঙ্গুবেনকে সন্তান প্রসবে সহায়তা করেন।

অ্যাম্বুলেন্সচালক যাদব কৌতুহলী সিংহের গতিবিধির দিকে নজর রাখছিলেন জানিয়ে চেতন বলেন, ‘পরে যাদব অ্যাম্বুলেন্সে চালু করে আস্তে আস্তে চালাতে থাকেন, যাতে সিংহগুলো পথ ছেড়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত সিংহগুলো গাড়ির গতি, বিশেষ করে আলো দেখে রাস্তা ছেড়ে দেয়।’ 

মাঙ্গুবেন মাকবানা ও তাঁর সন্তানকে বর্তমানে জাফরাবাদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দুজনেরই শারীরিক অবস্থা ভালো।