যৌন হয়রানির অভিযোগ করাই যেন এই নারীর শখ!

Looks like you've blocked notifications!
তিন বছরে ১৫ জনের বিরুদ্ধে ভুয়া ধর্ষণের অভিযোগ করেন জেমা বিয়ালে। ছবি : নিউজ গ্রুপ নিউজপেপার

যুক্তরাজ্যের নাগরিক জেমা বিয়ালে (২৫)। অন্যের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির (ধর্ষণ) অভিযোগ করাই যেন তাঁর শখ। গত তিন বছরে তিনি ১৫ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন। তার মধ্যে আবার একজনের দুই বছরের সাজাও হয়েছে।

২০১১ সালে জেমা মাহাদ কাসিম নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন। এ অভিযোগে কাসিমের দুই বছরের জেলও হয়। জেমা এ সম্পর্কে পুলিশকে জানিয়েছিলেন, গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে কাসিম তাঁকে ধর্ষণ করেন। এমনকি তিনি গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে তাঁকে প্যান্ট খুলতেও বলেন।

এরপর তিনি ২০১২ সালে তিনি নোআম শাজিদ নামের আরেক ব্যক্তি বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। জেমা তাঁকে শাজিদ নির্মমভাবে যৌন নিপীড়ন করেছেন তা প্রমাণের জন্য নিজেই নিজেকে আহত করতেন।

শাজিদ অবশ্য এই অভিযোগের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েও যান।

এরপর জেমা ২০১৩ সালে আরো ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন।

একই বছর তিনি তাঁর দুই প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মিডলসেক্স কাউন্টির অ্যাশফোর্ডে নিজ বাড়িতে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। এই অভিযোগের দুই মাস পর তিনি আরো চারজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ আনেন।

এর মধ্য থেকে জেমার দেখিয়ে দেওয়া দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

একপর্যায়ে পুলিশ জেমার কথার মধ্যে অসঙ্গতি খুঁজে পায়। এরপর তাদের সন্দেহ হয় যে জেমা মিথ্যে বলছে।

জেমা ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা আদালতেও দৃঢ়ভাবে বলেন। কিন্তু সাউথওয়ার্ক ক্রাউন কোর্টের ১১ সদস্যের একটি বেঞ্চের জেরার মুখে সত্যটা বেরিয়ে আসে। এতে ছয়জন পুরুষ ও পাঁচজন নারী বিচারক ছিলেন। তাঁরা জেমাকে আট ঘণ্টা ৪৫ মিনিট ধরে জেরা করেন। 

এরপর বিচারক নিকোলাস লরেইন তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দিয়ে আগস্ট মাসে বিচার শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

জেমা আদালতকে জানিয়েছেন, তিনি মোটা হওয়ার কারণে স্কুলে খুব নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তিনি একজন সমকামী (লেসবিয়ান) ছিলেন।

জেমা বলেন, ‘আমি কোনো পুরুষের কাছে যাব না। আমি জানি না তাদেরকে কীভাবে শারীরিক সম্পর্কের জন্য কাছে টানতে হয়।’ এরপর তিনি শক্তভাবে বলেন, ‘আমি তো আর উভয়গামী নই।’

জেমার বিরুদ্ধে ওঠা মিথ্যাচারের অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা সার্জেট কেভিন লিনট তাকে ‘ক্রমাগত মিথ্যাচারী’ বলে আখ্যা দিয়ে জানান, তিনি বারবার আদালতকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছেন। তাঁর এই মিথ্যাচার বিষয়ে তদন্ত চলছে।

লিনট  বলেন, ‘শুধু তাই নয়, তিনি এখনো আদালতে একের পর এক মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বিচারে ভুল হতে পারে, শাস্তি পেতে পারে অনেক নিরপরাধ মানুষ।’

২৪ আগস্ট আদালতে তোলার আগ পর্যন্ত তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হবে বলেও জানান লিনট।