তসলিমার সঙ্গে সাক্ষাতের প্রয়োজন নেই : মার্কন্ডেয় কাটজু
‘গরিবরা ধর্ম না থাকলে পাগল হয়ে যাবে। সুতরাং ধর্মের সমালোচনা করা যাবে না। এ কোনো কথা?’—টুইটারে তসলিমা নাসরিনের এমন বার্তায় চটেছেন প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান এবং ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মার্কন্ডেয় কাটজু।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘গুডবাই টু তসলিমা’ শিরোনামে এক পোস্টে তসলিমার সঙ্গে সাক্ষাতের কোনো কারণ থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন মার্কন্ডেয় কাটজু।
মার্কন্ডেয় কাটজু তাঁর ফেসবুক ভেরিফায়েড পোস্টে লিখেছেন, ‘টুইটারে ওই মন্তব্যের মাধ্যমে তসলিমা নাসরিন আমার সমালোচনা করেছেন। কারণ তিনি আগে বলেছিলেন, গরিব মানুষ এতটাই কষ্টের জীবন কাটায় যে, মানসিক আশ্রয়ের জন্য ধর্ম না থাকলে তারা পাগল হয়ে যেত। তবে আমি কখনোই বলিনি যে, সমালোচকের দৃষ্টিতে ধর্ম নিয়ে গবেষণা করা যাবে না।
মার্কন্ডেয় কাটজু লিখেছেন, ‘এটি স্পষ্ট যে সমাজের ধর্মের ভিত্তি নিয়ে কোনো বৈজ্ঞানিক বোধবুদ্ধি তসলিমা নাসরিনের নেই এবং এই বিষয়ে তাঁর জানারও কোনো আগ্রহ নেই। তিনি সন্দেহাতীতভাবে একজন সাহসী মানুষ, যিনি বাংলাদেশের হিন্দু ও নারীদের ওপর নিপীড়ন ও নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। কিন্তু কীভাবে ধর্মের বিস্তারে সামাজিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তা নিয়ে বৈজ্ঞানিক কোনো ধারণা তাঁর নেই। তাঁর উল্লিখিত মন্তব্য প্রমাণ করে তিনি অন্যের বক্তব্য বিকৃত করতে পারেন, যা তাঁর বৃদ্ধিবৃত্তিক অসততার বিশ্বাসঘাতকতা।’
মার্কন্ডেয় কাটজু লিখেছেন, ‘আমি নিজেই ধর্মের সমালোচক এবং প্রায়ই বলি যে সব ধর্মই কুসংস্কার। কিন্তু আমি এটিও বুঝি দরিদ্রতা, শোষণ ও ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাস না দূর হলে (এবং এটি দীর্ঘ সময় নেবে, কয়েক প্রজন্ম পর্যন্ত লাগতে পারে) ধর্ম আমাদের জীবনে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে থাকবে।’
ফেসবুকে মার্কন্ডেয় কাটজু লিখেছেন, ‘বিশ্বের ৭৫ শতাংশ দরিদ্র মানুষ এতটাই কষ্টকর জীবন-যাপন করে যে, মানসিক আশ্রয়ের জন্য ধর্ম না থাকলে তারা পাগল হয়ে যেত। আর যাঁরা গবিব নয় তাঁরাও ভাগ্যের কারণে দেবতার মতো অতিপ্রাকৃত জিনিসে বিশ্বাস করে এবং দেবতার আক্রোশ থেকে মুক্তি চায়।’
‘আমি অনেকবার ধৈর্যসহকারে তসলিমার বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি। তবে সে মনে হয় পুরোপুরি দাম্ভিক ও গণ্ডমূর্খ এবং ধীরে ধীরে বুঝতে পারি আমি সময় নষ্ট করছি। তাই তসলিমাকে বিদায়। আমাদের পূর্বনির্ধারিত সাক্ষাতের কথা আমি রাখতে পারব না।’