বেআইনি সব সহিংসতার নিন্দা জানাই : সু চি
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শক ও কার্যত নেতা অং সান সু চি বলেছেন, রাখাইনে যেকোনো ধরনের বেআইনি সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানায় তাঁর সরকার।
দেশটির রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতার মধ্যেই মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে সু চি এ মন্তব্য করেন।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, সেনাবাহিনী, অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দোসরদের হামলায় প্রাণভয়ে এরই মধ্যে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। এমন বাস্তবতায় মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিবিড় পর্যবেক্ষণকে ভয় পান না বলে মন্তব্য করেন সু চি।
‘অন্যের ওপর দোষারোপ কিংবা দায় অস্বীকার করা মিয়ানমার সরকারের উদ্দেশ্য নয়। আমরা সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বেআইনি সহিংসতার নিন্দা জানাই’, বলেন সু চি।
‘আমরা রাজ্যে (রাখাইন) শান্তি, স্থিতিশীলতা ও আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর’, যোগ করেন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান।
গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইনের বেশ কিছু সেনা ও পুলিশ চৌকিতে একযোগে হামলা হয়। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এ হামলার দায় স্বীকার করে।
২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু হয়। এর পর থেকে প্রতিদিনই মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢোকে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। বাংলাদেশের কক্সবাজারে আসা এই শরণার্থীদের মুখে মুখে সেনা ও সহযোগীদের হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের গল্প।
আগস্টে রাখাইনে সহিংসতা শুরুর পর থেকে মঙ্গলবারই প্রথমবারের মতো এ নিয়ে মুখ খুললেন শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি। এর আগে দীর্ঘ নীরবতায় আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছেন তিনি।
‘অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ আছে এবং আমাদের সবই শুনতে হবে। কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আগে এই অভিযোগগুলো যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে করা হচ্ছে কি না, তা আমাদের নিশ্চিত হতে হবে’, বলেন সু চি।
একসময় গণতন্ত্রের মানসকন্যা হিসেবে সারা বিশ্বে প্রশংসা কুড়ানো সু চি বলেন, তাঁর উদীয়মান গণতান্ত্রিক দেশে সমস্যাটা শুধু রাখাইন রাজ্যে নয়, আরো বহু জটিলতার মধ্য দিয়ে তাঁকে যেতে হচ্ছে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শক বলেন, ‘আমরা নতুন (গণতন্ত্র) ও ভঙ্গুর দেশ, যাতে বহু সমস্যা রয়েছে। তবে আমাদের এর সবগুলোকে মোকাবিলা করতে হবে।’
‘আমাদের শুধু অল্প কিছু বিষয়ের ওপর নজর দিলে হবে না।’