ব্যাঙ শামুক মাছ সব কাঁচাই খান রাজকুমার
প্রাণী ও পোকামাকড় আস্ত ধরে কাঁচা খাচ্ছেন এক যুবক। বিস্ময়কর এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমায়। বসিরহাটের তেঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা রাজকুমার বিশ্বাস মাছ, ব্যাঙ, শামুক, তেলাপোকা, মাছি, পিঁপড়াসহ বিভিন্ন প্রাণী ও কীটপতঙ্গ কাঁচা খেতে পারেন।
২২ বছরের যুবক রাজকুমার বলেন, টেলিভিশনে ডিসকভারি চ্যানেল দেখে প্রাণী ও পোকা কাঁচা খাওয়ায় উদ্বুদ্ধ হয়েছেন তিনি। তবে রাজকুমারের এই খাদ্যাভ্যাসকে সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক এবং এই কারণে তাঁর স্বাস্থ্যের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় চিকিৎসকরা।
তেঘরিয়া গ্রামের বাসিনফা গনো বিশ্বাসের ছেলে এই রাজকুমার বিশ্বাস। বসিরহাটের সসিনা বাজারে একটি সেলুনের দোকান রয়েছে তাঁর। বাবার সঙ্গে সেই সেলুনেই কাজ করেন রাজকুমার। মাত্র সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেই বাবার সঙ্গে কাজ শুরু করেন তিনি। তবে কাজের ফাঁকে তাঁর নেশা বলতে ছিল মনোযোগ দিয়ে টেলিভিশনে ডিসকভারি চ্যানেল দেখা।
সাত বছর আগে একদিন ডিসকভারি চ্যানেলে প্রাণী ও পোকামাকড় কাঁচা খাওয়া দেখে মুগ্ধ হন রাজকুমার। তার পর থেকেই বনে-বাঁদাড়ে ঘুরে ঘুরে সব রকমের কাঁচা প্রাণী খাওয়া অভ্যাস করেন তিনি। রাজকুমারের বর্তমান খাদ্যতালিকায় রয়েছে জ্যান্ত কেঁচো, ব্যাঙ, শামুক, মাছি, পিঁপড়ে, আরশোলা। সেই সঙ্গে কাঁচা মাছ, কাঁকড়া, ছাগলের চর্বি তো রয়েছেই। রাজকুমারের আজ একটাই লক্ষ্য, তিনি একদিন টিভির পর্দায় জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
নিজের মুখেই রাজকুমার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কাঁচা প্রাণী খেতে আমার খুব ভালোই লাগে। কোনো অসুবিধা হয় না।’ রাজকুমারের দৈনিক খাবারের তালিকাও অন্য আর পাঁচজনের থেকে আলাদা। যেখানে একজন স্বাভাবিক মানুষ দিনে দুবার ভারী খাবার ও দুবার হালকা খাবার খায়, সেখানে রাজকুমারের দিনে সাত থেকে আটবার ভারী খাবার লাগে। নিয়মিত ভাতও খান তিনি। আর রাজকুমারের ছোটবেলা থেকে এই অদ্ভুত খাবার-দাবারের আগ্রহে উৎসাহ দিয়েছেন তাঁর বাবা গনো বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘ছেলে একটা ব্যতিক্রমী রেকর্ড গড়তে চেয়েছিল। আমি তাতে উৎসাহ জুগিয়েছি।’
রাজকুমারের এই ধরনের কাঁচা প্রাণী খাওয়ার পেছনে কোনোরকম বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিশেষ চিকিৎসক পঙ্কজ অধিকারী বলেন, এটা আসলে একধরনের মানসিক রোগ। তবে জীবন্ত প্রাণী খাওয়ার ফলে এর দ্বারা জীবাণুতে আক্রান্ত হওয়া ছাড়া আর কোনো সমস্যার আশঙ্কা নেই বলেই তিনি মনে করেন।
রাজকুমারের এই আজগুবি খাদ্যাভ্যাসের বিষয়ে বসিরহাট মহকুমার মুখ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দেবব্রত মুখার্জি বলেন, কাঁচা প্রাণীর মাংস খাওয়াটা সব সময়ই বিপজ্জনক। এই ধরনের অভ্যাসের ফলে বর্তমানে রাজকুমার বিশ্বাসের কোনো রকম সমস্যা না হলেও অদূর ভবিষ্যতে তাঁর শরীরে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।