চূড়ান্ত হচ্ছে নিজ গাড়িতে চার দেশ ঘোরার চুক্তি
এখন থেকে নিজের গাড়িতে করেই সরাসরি সফরে বেরিয়ে পড়া যাবে বাংলাদেশ থেকে ভারত-নেপাল কিংবা ভুটানের উদ্দেশে। কোনো বাড়তি ঝামেলা ছাড়াই ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে এই চার দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে পৌঁছে যাওয়া যাবে ঢাকা, কাঠমান্ডু কিংবা ব্যাংককে।
চলতি বছরের জুন মাসে সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত এই দেশগুলোর মধ্যে ‘মোটর ভেহিকেলস অ্যাগ্রিমেন্ট’ সম্পাদিত হয়। গতকাল শনিবার কলকাতায় বেঙ্গল চেম্বারে কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে ভারত-বাংলাদেশ-নেপাল-ভুটানের মধ্যে মোটর ভেহিকেলস অ্যাগ্রিমেন্টের খসড়া প্রোটোকল চূড়ান্ত করতে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সেখানেই এসব কথা জানান ভারতের কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও নীরজ ভার্মা।
পশ্চিমবঙ্গের পরিবহনসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আশা করছি আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই চার দেশের মধ্যে যান চলাচলের এই প্রোটোকল চূড়ান্ত হয়ে যাবে। এতে দেশগুলোর মধ্যে পণ্যবাহী বা যাত্রীবাহী যান চলাচল অনেকটাই সুগম হবে। পর্যটকরা মোটরসাইকেলেও যেন এই চার দেশে যাতায়াত করতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও সহজ করা হচ্ছে।’
ভারতের কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, নতুন এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পরিকাঠামোগত অনেক উন্নতি ঘটবে। দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেন বাড়বে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। উপকৃত হবে পর্যটনশিল্প। তবে একাধিক দেশে যাতায়াতকারী গাড়িগুলোতে থাকতে হবে জিপিএস প্রযুক্তি। থাকবে কন্ট্রোল রুম। সেখান থেকে অনলাইনের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে। চুরি-ছিনতাই এড়াতে পণ্যবাহী গাড়িগুলি বিশেষভাবে সিল করা থাকবে।
কর্মশালা শেষে পশ্চিমবঙ্গের পরিবহন দপ্তরের প্রধান সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় আরো বলেন, রাষ্ট্রের ‘লুক ইস্ট পলিসি’ অনুযায়ী ভারত-বাংলাদেশ-নেপাল-ভুটান বাস রুটের হাত ধরেই পরবর্তী পদক্ষেপে আগামী বছরের মধ্যেই সরাসরি মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড পর্যন্ত বাস পরিষেবা চালু হতে যাচ্ছে। সুভাষচন্দ্র বসুর বিখ্যাত ‘এসকেপ রুট’ ভারতের ইম্ফল থেকে মান্ডাল (মিয়ানমারে) রুটে বাস পরিষেবা শুরু হবে আগামী বছরেই। এ ছাড়া আগামী দিনে আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গেও এমন চুক্তি সম্পাদিত হতে পারে। এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
শনিবারের এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বাস-ট্রাকচালক, পর্যটন সংস্থার কর্মকর্তা ও এই চুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।