৪২ বছর আহাজারির পর মা জানলেন, কফিনে নেই সন্তান

Looks like you've blocked notifications!
গ্যারি প্যাটনের সমাধির নামফলক। ছবি : ওয়াশিংটন পোস্ট

স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে ১৯৭৫ সালে শিশুসন্তান গ্যারি প্যাটনকে  সমাধিস্থ করেন লেডিয়া রিড। এর পর পেরিয়ে গেছে ৪২ বছর। দীর্ঘ এই সময়ে প্রতি সপ্তাহেই ফুল নিয়ে প্রিয় সন্তানের সমাধিতে যেতেন রিড। সন্তান হারানোর বেদনায় কাঁদতেন, নীরবে সময় কাটাতেন। সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাহায্যে সেই কবর খুঁড়ে দেখেন, সেখানে তাঁর সন্তানের কোনো অস্তিত্বই নেই।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়, ৪২ বছর আগে সন্তানকে সমাধিস্থ করার সময়, তার কাছে যেতে দেওয়া হয়নি রিডকে। কিন্তু সন্তানকে দেখার বাসনা মনে পুষে রেখেছিলেন এই নারী। মাঝেমাঝেই তিনি সন্তানকে দেখতে চাইতেন। গত মাসে রিড সেখানকার এক সাংসদের সহায়তায় সমাধি খুঁড়ে সন্তানকে দেখার অনুমতি পান। কিন্তু সমাধি খোঁড়ার পর মিলে এক বুক হতাশা। 

রিড ওয়াশিংটন পোস্টকে জানান, সমাধি খুঁড়ে কফিন, ফুলের বাক্স পাওয়া যায়। কিন্তু সেখানে কোনো লাশের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশের খোঁজে প্রায় ৬ ফুট পর্যন্ত গর্ত করা হয়। কিন্তু তার কোনো হদিস মেলেনি। 

ওই ঘটনার পর স্থানীয় এক ফরেনসিক নৃবিজ্ঞানীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন রিড। এর পর পারিপার্শ্বিক সব কিছু বিশ্লেষণ করে ওই নৃবিজ্ঞানী কোনো লাশের অস্তিত্ব খুঁজে পাননি।

এই বিষয়ে শিশুটির মা রিড জানান, সম্ভবত এই কফিনে কখনো শিশুটির লাশ রাখা হয়নি। শিশুর কাপড়, একটি ফুলের বক্স, কফিন সবই পাওয়া গেছে। কিন্তু মৃত মানুষের হাড় কিংবা এ জাতীয় কোনো কিছুই পাওয়া যায়নি।

ওয়াশিংটন পোস্টকে রিড বলেন, তাঁর শিশু আদৌ মারা গেছে কি না, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন।

লেডিয়া রিড বলেন, ‘গ্যারির জন্মের সময় আমি হাসপাতালে ভর্তি হই। সে সময় হাসপাতালে আমাকে প্রায় ৩৪ সপ্তাহ থাকতে হয়। আমি যেদিন হাসপাতালে ভর্তি হই, তার পরের দিন আমাকে অস্ত্রোপচার করতে নেওয়া হয়। আর গ্যারিকে নেওয়া হয় স্পেশাল কেয়ার ইউনিটে। এক পর্যায়ে তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দিতে হয়।’

 ওই নারী আরো বলেন, ‘‘গ্যারির মৃত্যুর সংবাদের পর আমি তাকে দেখতে চাই। কিন্তু চিকিৎসক আমাকে বলেন, ‘আপনার শরীরের যে অবস্থা, তাতে মৃত সন্তানকে না দেখাই ভালো। সমাধির সময় আমার সন্দেহ হয়, কিন্তু কেউ আমার কথা শোনেনি।’’’

নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করা রিড বলেন, ‘এখন আমার কাজ হচ্ছে যত ধরনের সম্ভাবনা আছে, সেগুলো খতিয়ে দেখা। যদি সে বেঁচে থাকে, তাহলে তাকে খুঁজে বের করবই।’