রাখাইনে গিয়ে সু চি কোন তিনটি বিষয় বললেন

Looks like you've blocked notifications!
ছবি : রয়টার্স

নতুন করে সহিংসতার দুই মাসের অধিক সময় পর হঠাৎ করেই প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্য পরিদর্শনে গেলেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। এ সময় তিনি যাত্রাপথে জমায়েত হওয়া কিছু লোকজনের সঙ্গেও কথা বলেন।

আজ বৃহস্পতিবার সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রীয় পরামর্শক সু চি একদিনের সফরে রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিতয়ে ছাড়াও অন্যান্য শহর পরিদর্শন করবেন।

সু চি এমন একটি সময়ে রাখাইন সফরে গেলেন, যার কয়েক ঘণ্টা আগেই দুর্গম, শীর্ণ কর্দমাক্ত পথ ধরে রাতের আঁধারে কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে সীমান্তের নাফ নদ পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশে চেষ্টা করতে দেখেছেন বার্তা সংস্থার রয়টার্সের এক আলোকচিত্রী।  

এসব রোহিঙ্গা ঘরে তৈরি বাঁশের দোলনায় করে শিশুদের নিয়ে হাঁটছিলেন। খুব বয়স্ক মানুষ চেপে বসেছিল অন্যের পিঠে। তাঁদের হাতে-কাঁধে ব্যাগ-বোঁচকাও ছিল।

বুধবার সীমান্তের বিভিন্ন পথ দিয়ে প্রায় চার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে রয়টার্সকে আজ কক্সবাজারে জানিয়েছেন বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কর্মকর্তা মেজর মোহাম্মদ ইকবাল।  

গত ২৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। প্রতিদিন নতুন করে বাংলাদেশ সীমান্তে এসে ভিড় করছে রোহিঙ্গা সদস্যরা। এ ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনের ধ্রুপদি’ উদাহরণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘ। 

তবে কোনো ধরনের নির্যাতন-হত্যা-ধর্ষণের অভিযোগ বরাবরই নাকচ করে আসছে দেশটির অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি। সেনাবাহিনীও দাবি করে, রোহিঙ্গারা সে দেশের নাগরিক নন, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া।

রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় সারা বিশ্বেই সমালোচনার মুখে পড়েন নোবেল পুরস্কারজয়ী সু চি। প্রায় দেড় দশকের অধিক সময় গৃহবন্দি থাকা সু চি পাঁচ দশক ধরে দেশটির ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা সেনাবাহিনীর কাছ থেকে ক্ষমতা নেন দুই বছরের কম সময় আগে।

সকালে অং সান সু চির মুখপাত্র জ হতয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সু চি এখন রাখাইনে রয়েছেন। তিনি মংডু ও বুথিডংয়েও যাবেন।’

‘এটা একদিনের সফর’, যোগ করেন মুখপাত্র। তবে কেন হঠাৎ করেই এই সফর, সে সম্পর্কে কিছু জানাননি তিনি।

স্থানীয় সময় আজ সকালে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে সু চিকে রাখাইনের রাজধানী সিতয়ে নামতে দেখেছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিনিধি। তাঁর সঙ্গে প্রায় ২০ জনের একটি প্রতিনিধিদলও রয়েছে।

আরাকান প্রজেক্ট মনিটরিং গ্রুপের নেতা ক্রিস লিওয়া রয়টার্সকে জানান, গাড়িবহর নিয়ে যাওয়ার সময় সু চির যাত্রাপথে কিছু মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। তিনি গাড়ি থামিয়ে প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেছেন।

‘এই সময় সু চি লোকজনকে শুধু তিনটি সুনির্দিষ্ট বিষয় বলেন, তাঁরা রাখাইনে শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন, সরকার আছেই তাঁদের সাহায্য করার জন্য এবং তাঁরা যেন নিজেদের মধ্যে ঝাগড়াঝাঁটি না করেন’, যোগ করেন ক্রিস লিওয়া।