অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের নতুন স্কিম চালু
অভিবাসীদের গন্তব্য হিসেবে বরাবরই জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকে অস্ট্রেলিয়া। প্রতিবছর সারা বিশ্ব থেকে প্রায় দুই লাখ ভিসার আবেদন আসে দেশটিতে।
সম্প্রতি দেশটিতে জনপ্রিয় কর্মদক্ষতা ভিত্তিক সাব-ক্লাস ৪৫৭ ভিসা বাতিল ও নাগরিকত্ব প্রদানের নতুন আইন নিয়ে চলছে নানা শঙ্কা ও সমালোচনা। সাব-ক্লাস ৪৫৭ এ আবেদন করার আর সুযোগ না থাকায় অনেকেই আশাহত হয়ে পড়েছেন।
তবে আশার কথা হলো, অস্ট্রেলিয়ায় সরকার এরইমধ্যে বেশ কিছু নতুন স্কিম চালু করেছে। অস্ট্রেলিয়ান মাইগ্রেশন আইন অনুসরন করে সঠিক নিয়মে আবেদন করলে বাংলাদেশি নাগরিকরাও পেতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব। কারণ প্রতিবছর শুধুমাত্র সঠিক পদ্ধতিতে আবেদন না করা ও সঠিক প্রোগ্রাম নির্ধারন করতে না পারার কারণেই অনেক বাংলাদেশির আবেদন প্রত্যাখাত হয়।
অস্ট্রেলিয়ায় নতুন প্রোগ্রামের মধ্যে অন্যতম হল তাসমেনিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস :
অস্ট্রেলিয়ার তাসমেনিয়া রাজ্যের মাধ্যমে মনোনীত হয়ে এ দেশে অস্থায়ীভাবে এসে স্থায়ীভাবে বসবাসের একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে এই সুযোগটি অস্ট্রেলিয়াতে যারা আগে থেকেই বসবাস করছিলেন তাদের জন্যই শুধু প্রযোজ্য ছিল।
ভিসা শ্রেণি ৪৮৯-র আওতায় অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ উপকূলীয় দ্বীপরাজ্য তাসমেনিয়া নতুন করে এ ভিসা চালুর ঘোষণা করেছে। নতুন এই ভিসার মাধ্যমে চার বছর মেয়াদে তাসমেনিয়ায় বসবাস ও কাজের সুযোগ পাবেন বিদেশি আবেদনকারীরা। দুই বছর বসবাস ও এক বছর কাজ করার পর স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন নতুন এই ভিসাধারীরা। এই ঘোষণা গত ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে।
স্কিল্ড- ইন্ডিপেন্ডেন্ট (মাইগ্র্যান্ট)ভিসা সাব ক্লাস ১৭৫ :
অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী সংখ্যা দিন দিন অনেক বেড়ে যাচ্ছে। মূলত দক্ষ শ্রমিকরাই উন্নত জীবন যাপনের উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে আসে। এর বাইরেও অনেক ভাবেই অস্ট্রেলিয়াতে অভিবাসী হিসেবে নাগরিকত্ব পাওয়া যেতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি যে পদ্ধতিতে সবাই যায় তা হলো সাব ক্লাস ১৭৫।
এই প্রক্রিয়ায় যদি কোনো স্পন্সর নাও থাকে, তবে শুধুমাত্র যোগ্যতা বা স্কিল যদি অস্ট্রেলিয়া সরকার ঘোষিত লিস্টের সাথে মেলে, বয়স ২৫-৫০ এর মধ্যে হয় এবং ইংরেজিতে দক্ষতা থাকে তাহলে সহজেই অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী হওয়া সম্ভব।
অষ্ট্রেলিয়ায় নাগরিকত্বের রয়েছে তিনটি ধাপ । প্রথম টিআর বা টেমপোরারী রেসিডেন্সি। দ্বিতীয় পিআর বা পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি এবং শেষ ধাপে রয়েছে পূর্ণাঙ্গ নাগরিকত্ব। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে যারা থাকেন তারা ভোটাধিকার ও প্রতিরক্ষা বাহিনীতে অংশগ্রহন করতে পারেন না।
বাংলাদেশি ভিসাপ্রত্যাশীরা খুব সহজেই সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী অগ্রসর হয়ে কাজ ও দক্ষতা প্রমাণের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করলে পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়ায় কাজ ও বসবাস করার সুযোগ পেতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়ায় মাইগ্রেশনের সব প্রোগ্রামকে বেশ কিছু সাব-ক্লাসের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলো :
• সাব-ক্লাস ১৮৯- স্কিলড ইনডিপেনডেন্ট ভিসা।
• সাব-ক্লাস ১৯০- স্টেট নমিনেটেড ভিসা।
• সাব-ক্লাস ৪৮৯- রিজিওনাল স্পনসরড ভিসা।
• সাব-ক্লাস ৪৮৫- অস্থায়ী গ্র্যাজুয়েট ভিসা।
এ ছাড়া বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত সহজ ক্যাটাগরিগুলো হচ্ছে :
• সাব-ক্লাস ৪৫৭-চাকরিদাতা কর্তৃক স্পনসরড অস্থায়ী ভিসা।
• সাব-ক্লাস ১৮৬- চাকরিদাতা কর্তৃক স্পনসরড স্থায়ী ভিসা।
• সাব-ক্লাস ৪০২-ট্রেনিং এবং গবেষণার জন্য ভিসা।
• সাব-ক্লাস ৪৬১ নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত পরিবারের সদস্যদের জন্য।
পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী ভিসা মাত্র ১২ মাসে :
সাব-ক্লাস ১৮৬, ১৮৯, ১৯০ এবং ৪৮৯-এর অধীনে যেকোনো বিদেশি নাগরিক এখন মাত্র ১২ মাসে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারছেন।
এই প্রোগ্রামের কিছু সুবিধা রয়েছে। এগুলো হলো : এর জন্য দেশ থেকে কোনো চাকরির অফার নিয়ে যেতে হবে না। সন্তানরা বিনামূল্যে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে, পরিবারের সদস্যরা বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া ১৬৯টি উন্নত দেশে ভিসা ছাড়াই যাতায়াত করার সুবিধা পাওয়া যাবে। রয়েছে সবচেয়ে কম খরচে এবং কম সময়ে স্থায়ী নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ, কোনো কোটা বা নির্ধারিত সংখ্যা নেই।
যেকোনো সময় স্টেট গভর্নমেন্ট নমিনেশনের জন্য আবেদন করা যায় এবং পরিবারের নির্ভরশীল সদস্যদের জন্য সরকারি খরচে সবচেয়ে কম টাকায় পিআর প্রসেস করা যায়।
পেশা :
প্রকৌশলী, চিকিৎসক, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মী, অ্যাকাউনটেন্ট, অডিটর, স্থপতি, ডেনটিস্ট, ফার্মাসিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্ট, ব্যাংকার, রেডিওলজিস্ট, নার্স, সনোগ্রাফার, প্যাথোলজিস্ট, সার্ভেয়ার, মিডওয়াইফ, শিক্ষক ইত্যাদি পেশার লোকজন নিজ নিজ ক্ষেত্রে যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন করতে পারবেন।
এই প্রোগ্রামে আবেদন করার জন্য ন্যূনতম যে যোগ্যতা থাকতে হবে তা হলো :
বয়সসীমা
অস্ট্রেলিয়া স্কিলড প্রোগ্রামে আবেদন করার জন্য প্রার্থীকে অবশ্যই ৫৫ বছরের নিচে থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রথমে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) সাবমিট করতে হবে। পরে ইনভাইটেশন আসলে মূল আবেদন জমা দিতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা
চার বছরের অনার্স এবং এক বছরের মাস্টার্স অথবা তিন বছরের অনার্স এবং দুই বছরের মাস্টার্স ডিগ্রিধারীরা আবেদন করতে পারবেন।
কাজের অভিজ্ঞতা
প্রথমে মনে রাখতে হবে যে, অস্ট্রেলিয়ার বাইরের যেকোনো ডিগ্রিকে অস্ট্রেলিয়ার সমমানের করার জন্য প্রার্থীকে ওই একই ক্ষেত্রে কমপক্ষে তিন থেকে পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন।
ইংরেজি জ্ঞান
প্রার্থীকে অবশ্যই আইইএলটিএস (সাধারণ বা একাডেমিক)-এর প্রতিটি মডিউলে আলাদা আলাদা করে ৬.০+ স্কোর করতে হবে। কোনো প্রার্থী যদি প্রতিটি মডিউলে আলাদা আলাদা করে ৭.০+ স্কোর করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে তিনি আবেদন করার সঙ্গে আরো ১০ পয়েন্ট পাবেন।
বাংলাদেশ থেকে যে কয়েকজন ইমিগ্রেশন আইনজীবী অত্যন্ত দক্ষতা, সততা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে মাইগ্রেশন নিয়ে কাজ করছেন, তাঁদের মধ্যে শীর্ষে আছেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আলহাজ শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ।
ওয়ার্ল্ডওয়াইড মাইগ্রেশন কনসালট্যান্ট লিমিটেডের কর্ণধার আলহাজ শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ। বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এমনকি শ্রীলঙ্কা থেকেও প্রতিবছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রচুর মানুষ মাইগ্রেশন করে অস্ট্রেলিয়ায়। প্রতিবছর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রচুর গ্র্যাজুয়েট বের হলেও শুধু আইইএলটিএস পরীক্ষা-ভীতির কারণে বাংলাদেশিরা বেশি যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ায় যেতে পারছে না।’ তিনি তরুণদের প্রতি বিশেষ করে যারা উন্নত দেশে বসবাস করতে আগ্রহী তাদের নিজের যোগ্যতার প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সঠিক সময়ে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে অস্ট্রেলিয়া খুব দূরের স্বপ্ন নয়।
অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন বিষয়ে আরো তথ্য জানতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইনজীবী শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত পাঠাতে পারেন এই ই-মেইল ঠিকানায় info@worldwidemigration.org । এ ছাড়া ভিজিট করতে পারেন www.wwbmc.com. ওয়েবসাইটে।
ঢাকার উত্তরায় ৭ নম্বর সেক্টরের ৫১ সোনারগাঁও জনপথে অবস্থিত খান টাওয়ারে ওয়ার্ল্ডওয়াইড মাইগ্রেশন লিমিটেডের অফিসেও খোঁজ নিতে পারেন। ফোনে প্রাথমিক তথ্যের জন্য কথা বলতে পারেন
০১৯৬৬০৪১৫৫৫, ০১৯০৪০৩৬৮৯৯, ০১৯০৪০৩৬৮৯৮, ০১৯৬৬০৪১৮৮৮, ০১৯৬৬০৪১৩৩৩ এই নম্বরগুলোতে। হাল নাগাদ তথ্য পেতে ভিজিট করতে পারেন www.facebook.com/WorldwideMigrationConsultantsLtd ফেসবুক পাতায়।