বাবার মৃত্যুর ২ বছর পর জন্মাল যমজ, কীভাবে সম্ভব?

Looks like you've blocked notifications!

মৃত্যুর দুই বছর পর যমজ বাচ্চার বাবা হলেন ভারতীয় নাগরিক প্রথমেশ পাতিল। ব্রেইন টিউমার ও ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৬ সালে মারা যান তিনি। তবে গত সোমবার তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়েসন্তান পৃথিবীতে আসে।

শুনতে অবাক লাগছে! কিন্তু এই বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির কিছুই অসম্ভব নয়। প্রথমেশের শুক্রবীজ ব্যবহার করে আইভিএফ (ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) পদ্ধতিতে এই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন ভারতের পুনের শায়াদ্রি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

প্রথমেশ পাতিলের মা রাজশ্রী পাতিল জানান, ২০১০ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য জার্মানি যান প্রথমেশ। জার্মানি গিয়েই তাঁর ব্রেইন টিউমার ধরা পড়ে। 

রাজশ্রী বলেন, ‘এটা আমার পরিবারের জন্য একটা বড় ধাক্কা ছিল। জার্মানির চিকিৎসকদের পরামর্শে প্রথমেশ কেমোথেরাপি নিতে শুরু করেন। এ সময় চিকিৎসকরা তাঁর শুক্রবীজ সংরক্ষণ করে রাখেন।’

রাজশ্রী আরো বলেন, ‘প্রথমেশের শারীরিক অবস্থা জানার পরে আমার প্রথম কাজ ছিল তাঁকে ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা।‘

এরপর প্রথমেশকে ২০১৩ সালে ভারতে নিয়ে আসা হয়। এখানে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন। একসময় তাঁর স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতিও দেখা যায়। কিন্তু ২০১৬ সালে মারা যান তিনি।

তবে ছেলের মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না স্কুলশিক্ষিকা মা রাজশ্রী পাতিল। তিনি তাঁর ছেলেকে ফিরে পেতে চাইছিলেন। তিনি জার্মানির চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁর সংরক্ষিত শুক্রবীজ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কথা বলেন। 

জার্মানি থেকে শুক্রবীজ আনার পর তা রাখা হয় পুনের শায়াদ্রি হাসপাতালে। সেখানেই ভাড়া নেওয়া হয় এক মাতৃগর্ভ। সেই গর্ভেই জন্ম নেয় প্রথমেশের যমজ সন্তান।  

আইভিএফ পদ্ধতির প্রধান ডা. সুপ্রিয়া পৌরাণিক বলেন, ‘হাসপাতালে শিশু জন্ম দিতে গিয়ে আমরা প্রতিনিয়তই আবেগী অনেক সুখের মুহূর্তের সাক্ষী হই। কিন্তু এটি ছিল এক শোকাহত মায়ের আবেগ, যিনি তাঁর ছেলেকে হারিয়েছেন।’

‘পুরো প্রক্রিয়াতেই তিনি যে সাহস, স্পৃহা দেখিয়েছেন, এ জন্য আমরা তাঁকে সাধুবাদ জানাই। আর যমজদের মধ্যে ফিরে আসার জন্য সেই ছেলেকেও জানাই শুভেচ্ছা,’ যোগ সুপ্রিয়া।