নেপালে বিক্ষোভকারী-পুলিশ সংঘর্ষ, নিহত ৮
নেপালে নতুন সংবিধানের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে কমপক্ষে আটজন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে সাতজন পুলিশ সদস্য এবং একজন পুলিশ সদস্যের ছেলে রয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে নেপালের পশ্চিমের কাইলালি জেলায় রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষ হয়।এর পরপর কিছু সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা ১৭ বলা হয়েছিল। তবে নেপালের ফার-ওয়েস্টার্ন রেজিওনাল পুলিশ পুলিশ সোমবার সন্ধ্যায় জানায়, সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা আট।
হিমালয়ান টাইমস ও নেপাল সংবাদদাতার বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, হাজার হাজার মানুষের মিছিলে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর স্থানীয়ভাবে তৈরি কুড়াল, বর্শা ও ইট দিয়ে হামলা চালায়।
নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাম দেব গৌতম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে সরকার সেনাবাহিনীর সদস্যদের সেখানে পাঠিয়েছে।
গত রোববার সাতটি প্রদেশ নিয়ে ফেডারেল নেপাল গঠনের লক্ষ্যে একটি সাংবিধানিক বিল জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হলে দেশব্যাপী তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। ফেডারেল নেপাল প্রস্তাবের বিরুদ্ধে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে গতকাল গণবিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।
বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, নতুন প্রদেশ গঠনের ফলে ঐতিহাসিকভাবে প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলো বৈষম্যের শিকার হবে। কাইলালি জেলায় থারু গোষ্ঠী নিজেদের আলাদা প্রদেশের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। ওই মিছিল থেকেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভকারীরা।
এদিকে বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা। তিনি বলেন, ‘যখন আমরা নতুন একটি যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি, ঠিক সে মুহূর্তে জনগণকে আমরা এমন কাজে সংশ্লিষ্ট হতে নিষেধ করছি, যা সামাজিক শান্তি বিঘ্নিত করে এবং জাতিগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়।’
এর আগে সোমবার সকালে অন্য শরিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী কৈরালা বলেছিলেন, ‘নতুন সংবিধানের মধ্যস্থতার আলোচনা চলছে। আমি জনগণের প্রতি ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিচ্ছি।
তারা আমাদের পরামর্শ দিতে পারেন। তবে বিক্ষোভ বন্ধ করতে হবে। যেসব বিষয় সামনে এসেছে, জনগণের চাহিদা, দেশের স্বার্থ ও প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখেই আমরা তার সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’
২০০৬ সালে নেপালের এক দশকের মাওবাদী বিদ্রোহের অবসান ঘটে। এর দুই বছর পর ২০০৮ সালে ২৪০ বছরের পুরনো হিন্দু রাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়। সে থেকে দেশটিতে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন ও গণতান্ত্রিক সংবিধান বা রাষ্ট্রীয় গঠনতন্ত্র প্রণয়নের চেষ্টা চলছে।